এই প্রথম তালিবান সরকারের কোনও মন্ত্রী পা দিতে চলেছেন ভারতের মাটিতে। ভারত-আফগানিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কে যা নিঃসন্দেহে এক নতুন মোড় বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। ছ’দিনের সফরে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি দিল্লি পৌঁছবেন আগামিকাল।
২০২১ সালের অগস্ট মাসে আফগানিস্তানে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখলের পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারত সরকারি ভাবে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের আমলা পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে একাধিক। আফগানিস্তানে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। পাঠিয়েছে ত্রাণ।
মনে করা হচ্ছে, পড়শি দেশ পাকিস্তানকে চাপে রাখতেই তালিবানের সঙ্গে সন্ধির হাত বাড়িয়েছে সাউথ ব্লক। পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করতেভারতীয় বাহিনী ‘সিঁদুর’ অভিযান চালানোর পর পরই গত ১৫ মে মুত্তাকির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তালিবান দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পরে সেটাই ছিল দু’দেশের মন্ত্রীদের মধ্যে প্রথম আলোচনা।পহেলগামে হামলার পরে তালিবান সরকার যে ভাবে ধিক্কার জানিয়েছিল, তার প্রশংসা করেছিলেন জয়শঙ্কর। অন্য দিকে, নয়া তালিবান শাসনে পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। আর এ বার তারই সুযোগ নিতেউন্মুখ নয়াদিল্লি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মুত্তাকি নয়াদিল্লি পৌঁছনোর আগেই অন্য কিছু দেশের সঙ্গে তালিবান সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি নিয়ে সম্প্রতি নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ওই বিমানঘাঁটি তিনি পুনর্দখল করতে চান। কারণ চিনের পরমাণু কর্মসূচির উপরে নজর রাখতে চায় তাঁর প্রশাসন। সম্প্রতি রাশিয়ায় ‘মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশন’-এর সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যৌথভাবে দেশগুলি যে বিবৃতি দিয়েছে, তাতে আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান এবং তার প্রতিবেশী দেশগুলিতে বিদেশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করার চেষ্টা মেনে নেওয়া যায় না। এতে আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ব্যাহত হতে পারে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল ভারতও। ভারত ছাড়াও তাতে যোগ দিয়েছিলেন আফগানিস্তান, চিন, ইরান, কাজ়াখস্তান, কিরঘিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান এবং উজ়বেকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি এবং শীর্ষ আধিকারিকেরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)