E-Paper

বাঙালি-বিদ্বেষের দাগ মেটাতে রাজধানীতে দুর্গা শরণে বিজেপি

দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক পরে ক্ষমতায় এসেই বিজেপি পুজো মণ্ডপগুলির ১২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ মকুব করেছে। সরল হয়েছে পুজোর ছাড়পত্র পাওয়া। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তের নজরদারিতে কমেছে পুলিশি ‘অতিসক্রিয়তা’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৫০

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

বাঙালি-বিদ্বেষী তকমা ঘোচাতে দুর্গাপুজোকে হাতিয়ার করে বার্তা দিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।

যে কারণে দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক পরে ক্ষমতায় এসেই বিজেপি পুজো মণ্ডপগুলির ১২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ মকুব করেছে। সরল হয়েছে পুজোর ছাড়পত্র পাওয়া। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তের নজরদারিতে কমেছে পুলিশি ‘অতিসক্রিয়তা’।

তবে তাল কেটেছে মুখ্যমন্ত্রীরই ফরমানে। যাতে তিনি দিল্লির সব পুজো উদ্যোক্তাদের দুর্গার পায়ের কাছে নরেন্দ্র মোদীর ছবি রাখার ‘প্রস্তাব’ দিয়েছেন। চলতি মাসে ৭৫ বছরে পা দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনায় মুখ্যমন্ত্রী ওই ‘পরামর্শ’ দিলেও, তা মানতে রাজি নয় অধিকাংশপুজো কমিটি।

চিত্তরঞ্জন পার্কের নবপল্লি পুজো সমিতির সচিব সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মায়ের পায়ের নীচে ছবি রাখার প্রশ্নই নেই। তবে নববধূর থিমে করা ওই পুজো মণ্ডপের একটি অংশ পহেলগামে নিহত পর্যটক এবং অপারেশন সিঁদুরের বীর সেনানীদের উৎসর্গ করা হচ্ছে।’’

‘এক জানলা ব্যবস্থা’ হওয়ায় বিদ্যুৎ, দমকল, পূর্ত দফতরের মতো সরকারি অনুমতি পেতে সুবিধা হয়েছে বলে জানিয়েছেন করোলবাগ পুজো সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিক। তিনিও বলেন, ‘‘কারও ছবি রাখার প্রশ্ন নেই। তবে আমাদের পুজো কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র অমিত শাহ। সেই শুভেচ্ছাবার্তা অবশ্য মণ্ডপে টাঙানা হবে।’’

বিজেপি সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ছবি রাখার প্রশ্নে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা ভাল ভাবে নেননি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। যে কারণে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার আর মুখ খোলেননি রেখা। তবে এ নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তোলায় বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা যুক্তি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে যে পুজো কমিটি সরকারি অনুদান নেয়, তাদের মণ্ডপে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখা বাধ্যতামূলক।’’

তবে বাঙালির প্রধান উৎসব পালনে যাতে সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের স্থানীয় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে নিয়মিত ভাবে যোগাযোগ রাখা, পুজো কমিটিগুলির কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না তা নিয়মিত ভাবে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সূত্রের মতে, জনসংযোগের লক্ষ্যে বিশেষ করে বাংলার ভোটের মুখ চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশ কিছু বিজেপি নেতাকেও আনা হয়েছে। যাঁরা বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পূর্ব দিল্লির এক পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।

দিন কয়েক আগেও, দিল্লির বিভিন্ন ঝুপড়ি-তে বাঙালি খেদাও অভিযান চালিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। বাংলা ভাষা শুনলেই দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল বাংলাদেশি হিসেবে। করা হচ্ছিল ‘পুশব্যাক।’

এ বার পুজোর সময়ে সেই দিল্লিতেই বিজেপির তৎপরতা দেখে তৃণমূলের এক নেতার কটাক্ষ, ‘‘ভোট আসছে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু দেশ জুড়ে বাংলা ভাষাভাষীদের অপদস্থ করা সবার আগে বন্ধ করতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2025 BJP new delhi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy