সম্প্রতি আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল) প্রধান লালু প্রসাদের কন্যা রোহিণী আচার্য নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেছিলেন। যার সারমর্ম ছিল, পদের জন্য তাঁর কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই। আত্মসম্মানই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রোহিণীর এই পোস্টটিকে ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে বিহারের রাজনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে দিদির পাশে দাঁড়িয়েছেন লালুর বড় ছেলে, তেজপ্রতাপ যাদব। তাঁর সতর্কবার্তা, যে বা যাঁরা তাঁর দিদিকে অপমান করবেন, তাঁকে শ্রীকৃষ্ণের ‘সুদর্শন চক্রের’ সামনে পড়তে হবে।
পুরো ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। লালু-কন্যা রোহিণী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘আমি আমার কর্তব্য এবং ধর্ম পালন করেছি। আমি তা করেও যাব। আমার কোনও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। বরং আমার কাছে আত্মসম্মানটাই সর্বোচ্চ’। এই পোস্টটি সামনে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। এমনকি, আরজেডি-র অন্দরের সব সমীকরণ ঠিকঠাক রয়েছে কি না, তা নিয়েও চলছিল জোর চর্চা।
অন্য দিকে, প্রায় একই সময়ে দলের একাধিক বড় নেতাকে সমাজমাধ্যমে ‘আনফলো’ করে দেন রোহিণী। সেই তালিকায় ছিলেন তাঁর আর এক ভাই তথা দলের নেতা তেজস্বী যাদবও। ঘটনাটি পুরো জল্পনায় কার্যত ঘি ঢালার কাজ করেছিল। লালুর দলের অন্দরেরখবর, বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনে দলের হয়ে লড়তে চেয়েছিলেন রোহিণী। গত লোকসভা নির্বাচনে বিহারের সারণ জেলা থেকে আরজেডি-র হয়ে লড়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোটে পরাজিত হন। সেই ফল দেখেই সম্ভবত আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেওয়ার সাহস করতে চাইছে না আরজেডি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, সম্ভবত সেই ‘অভিমান’ থেকেই পোস্টটি করেছিলেন রোহিণী। নিজের ভাই-সহ দলীয় নেতাদের সমাজমাধ্যমে ‘আনফলো’ করার সিদ্ধান্তও সম্ভবত সেখান থেকেই নেন তিনি।
তবে এমন পরিস্থিতিতে দিদির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ভাই তেজপ্রতাপ। তিনি বলেছেন, ‘‘রোহিণী আমার চেয়ে অনেকটাই বড়। উনি জীবনে যা ত্যাগ করেছেন, তা যে কোনও মানুষের পক্ষে করা কঠিন।’’ এর সঙ্গে তেজপ্রতাপ আরও জুড়েছেন, ‘‘এই মুহূর্তে যা চলছে, তাতে আমি পুরোপুরি দিদির পাশে রয়েছি। কেউ যদি ওঁকে অপমান করার চেষ্টা করেন, মনে রাখবেন আপনাকে শ্রীকৃষ্ণের সুদর্শন চক্রের সামনে পড়তে হবে।’’ ত্যাগের প্রসঙ্গ তুলে তেজপ্রতাপ আসলে রোহিণীরলালু প্রসাদকে কিডনি দানের কথাই উল্লেখ করেছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)