Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

Calcutta High Court: হিংসা-রিপোর্টের পরিশিষ্ট পাবে না রাজ্য: হাই কোর্ট

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল মূলত বিধানসভার রাজ্যের ভোট-পরবর্তী অশান্তি পরিদর্শনে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ০৭:২০
Share: Save:

রাজ্যের ভোট-পরবর্তী অশান্তি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদলের রিপোর্টের পরিশিষ্ট অংশটি রাজ্য সরকারকে দেওয়া যাবে না বলে কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছে। তারা বলেছে, রিপোর্টের ওই অংশ বাদ দিয়েই বাকি বিষয়ের জবাব রাজ্যকে আগামী সোমবারের মধ্যে হলফনামার আকারে আদালতে জমা দিতে হবে। ফের শুনানি হবে আগামী বুধবার।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল মূলত বিধানসভার রাজ্যের ভোট-পরবর্তী অশান্তি পরিদর্শনে। তবে তাদের রিপোর্টে ভোট-পরবর্তী হিংসা ছাড়াও খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোথায় কোথায় ধর্ষণের মতো অপরাধ হয়েছে, তার সবিস্তার তথ্য-সহ পরিশিষ্ট অংশ রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়নি বলে এ দিন হাই কোর্টে জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। তিনি জানান, রাজ্যের তরফে কমিশনের কাছে ওই রিপোর্ট চাওয়া হলে তারা জানিয়ে দিয়েছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া ওই পরিশিষ্ট অংশ দেওয়া যাবে না।

রিপোর্টের ওই অংশ না-পেলে কী ভাবে তার উত্তর দেওয়া যাবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের অন্য দুই কৌঁসুলি কপিল সিব্বল ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও। বস্তুত, কমিশনের প্রতিনিধিদলের রিপোর্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন সিঙ্ঘভিও সে-কথাই বলেন আদালতে। তিনি দেখিয়েছেন, বাংলা হরফে হাতে লেখা যে-অভিযোগ রয়েছে, তা
র বয়ানের সঙ্গে কমিশনের ইংরেজিতে লেখা সারাংশের মিল নেই। এই ধরনের অনেক বিভ্রান্তি ওই রিপোর্টে রয়েছে বলে তিনি আদালতকে জানান। ওই রিপোর্ট বাতিলের দাবিও করেন তিনি।

তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পরিশিষ্ট অংশটি রাজ্যকে দেওয়া যাবে না। কেন দেওয়া যাবে না, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রিপোর্টের ওই পরিশিষ্ট অংশে ধর্ষণের অভিযোগকারিণীদের সবিস্তার তথ্য রয়েছে। তা জনসমক্ষে এলে তাঁদের সমস্যা হবে। তাই সেই অংশটা দেওয়া হচ্ছে না। মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী সুবীর সান্যালেরও বক্তব্য, এগুলি স্পর্শকাতর বিষয়। শাসক দলের নেতারা অভিযোগকারীদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এজি অবশ্য জানান, ঘটনা বিশদ ভাবে জানার জন্য ওই পরিশিষ্ট অংশ প্রয়োজন। রাজ্য ওই নিগৃহীতাদের নম্বর কেন প্রকাশ করবে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এই ধরনের ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও তদন্তকারী অফিসারকে বিশ্বাস করা হচ্ছে না বলে জানান সিব্বল।

মামলাকারীদের কৌঁসুলিদের বক্তব্য, রাজ্যের পুলিশের উপরে তাঁদের আস্থা নেই। সেই জন্যই তাঁদের আর্জি, আদালতের নজরদারিতে বিশেষ তদন্তকারী দল এই সব ঘটনার তদন্ত করুক। ভোট-পরবর্তী সময়ে মৃত বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকারের পরিবারের আইনজীবী মহেশ জেঠমলানী আদালতে জানান, ঘটনার সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। এখন তারা তদন্তের দাবি করতে পারে না। আক্রান্তেরা পুলিশ ও শাসক দলের ভয়ে ভীত। অভিজিতের দেহের দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন সেই ময়না-তদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের ডিভিডি আদালতে জমা পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court National Human Rights Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE