ছয় বছর আগে ১৬ বছর বয়সি প্রেমিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন তরুণ। দু’জনের সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠলেও আইনত যা ধর্ষণের আওতায় পড়ে। ফলে সেই থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতেই ছিলেন তরুণ। অন্য দিকে, তাঁর সেই প্রেমিকাও এখন সাবালিকা। সে কথা মাথায় রেখে ‘নির্যাতিতা’কে বিয়ে করার জন্য ‘ধর্ষক’কে এক মাসের জামিন দিল আদালত। সম্প্রতি ওড়িশায় ঘটনাটি ঘটেছে। ২৬ বছর বয়সি ওই তরুণের জামিন মঞ্জুর করেছেন ওড়িশা হাই কোর্টের বিচারপতি এসকে পানিগ্রাহী।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। অভিযোগ, ১৬ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন ওড়িশার ওই তরুণ। অভিযোগ, তার পর থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হন তিনি। ২০২০ ও ২০২২ সালে দু’বার অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। উভয়বারই প্রেমিক তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। শেষমেশ ২০২৩ সালে শিশু সুরক্ষা আইন (পকসো)-র অধীনে প্রেমিকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন সদ্য-সাবালিকা তরুণী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই জেলে ঠাঁই হয় প্রেমিকের।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি ওই মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করেন ওই তরুণ। দাবি ছিল, তাঁর ও ওই তরুণীর পরিবার দু’জনের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদালতে তরুণের আইনজীবী বলেন, ‘‘ওই তরুণীর বয়স এখন ২২ বছর। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন। তরুণও এই বিয়েতে সম্মতি দিয়েছেন।’’ তরুণ জামিনে মুক্তি পেলেই বিবাহের অনুষ্ঠান হবে বলেও জানান তিনি। এর পরেই উচ্চ আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত ওই তরুণকে এক মাসের জন্য জামিন দেওয়া হয়েছে, যাতে তিনি ওই তরুণীকে বিয়ে করতে পারেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, তাঁদের সম্পর্ক সম্মতিতেই হয়েছিল, জোরপূর্বক কিংবা শোষণমূলক ছিল না। আদালতে বিচারপতি এসকে পানিগ্রাহী বলেন, ‘‘আইনগত দিক দিয়ে এই অভিযোগটি গুরুতর হলেও এই মামলাটিতে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণীর বয়সের বিশেষ ফারাক ছিল না। তা ছাড়া, অভিযোগ দায়ের করার আগে দু’জনের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। ফলে সব কিছু উভয়ের সম্মতিতেই হয়েছিল।’’ আদালতের আরও যুক্তি, এখন দুই পরিবারের সমঝোতাতেই দু’জনে বিয়ে করতে চলেছেন। ফলে দু’জনের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিযুক্তকে ‘সাময়িক অব্যাহতি’ দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে যাতে চলমান তদন্ত কিংবা আইনের মর্যাদার সঙ্গে আপস না করা হয়, সে দিকটিও দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।