E-Paper

ভাগের কাঁটায় বিদ্ধ ভাইবোন

তেলঙ্গানার নতুন রাজ্য হলে মুখ্যমন্ত্রী হন চন্দ্রশেখর রাও। এখন তিনি গদিতে না থাকলেও তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে পুত্র-কন্যার মধ্যে শুরু হয়েছে প্রবল সংঘাত।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ০৭:১৪
কে চন্দ্রশেখর রাও।

কে চন্দ্রশেখর রাও। —ফাইল চিত্র।

রাজনীতি ভেঙে দিচ্ছে রাখির বন্ধন!

দেশের রাজনীতিতে আবার দাদা বনাম বোনের লড়াই। এ বার তরজা তেলঙ্গানায়। ভারত রাষ্ট্র সমিতির কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের পুত্র কে টি রাম রাও এবং কন্যা কে কবিতার মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে। দল ভাঙনের মুখে।

তেলঙ্গানার নতুন রাজ্য হলে মুখ্যমন্ত্রী হন চন্দ্রশেখর রাও। এখন তিনি গদিতে না থাকলেও তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে পুত্র-কন্যার মধ্যে শুরু হয়েছে প্রবল সংঘাত। দলের অনুষ্ঠানে চন্দ্রশেখর কেন বিজেপির বিরুদ্ধে মাত্র দু’মিনিট বলেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাবাকে চিঠি দেন কবিতা। সেই চিঠি ফাঁস হলে কবিতা তাঁর দাদা কে টি রাম রাওয়ের শিবিরের দিকেই আঙুল তোলেন। দাদার বিরুদ্ধে তাঁর আরও অভিযোগ, তিনি বিজেপির সঙ্গে দলকে মিশিয়ে দিতে চাইছেন। এ বার কবিতার হুঁশিয়ারি, তিনি নতুন দল গড়বেন।

অন্ধ্রপ্রদেশেও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস আর রেড্ডির পুত্র-কন্যা, জগন্মোহন বনাম শর্মিলা। কংগ্রেস ভেঙে জগন্মোহন নিজের দল গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হন। তাতে বোন শর্মিলার অবদানও ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হয়ে জগন্মোহন বোনকে দেখেননি। শর্মিলা তাই কংগ্রেসে ফিরে প্রদেশ সভানেত্রী হয়ে দাদার বিরুদ্ধেই লড়ছেন। পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ নিয়েও লড়াই চলছে।

তামিলনাড়ুর ডিএমকে-র অন্দরেও দাদা বনাম বোন। প্রয়াত করুণানিধির দ্বিতীয় স্ত্রী দয়ালু আম্মালের ছেলে এম কে স্ট্যালিন এখন ডিএমকে প্রধান ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তৃতীয় স্ত্রী রজতী আম্মালের কন্যা কানিমোঝি সাংসদ। স্ট্যালিন তাঁর পুত্র উদয়নিধিকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ক্ষুব্ধ কানিমোঝি উদয়নিধির ডাকা বৈঠকে যেতেন না। কানিমোঝিকে সংসদীয় দলনেত্রী করেন স্ট্যালিন। ভারসাম্যের নীতি: ‘রাজ্যে দাদা, দিল্লিতে বোন’।

শরদ পওয়ারও একই নীতি নিয়ে ভাইপো অজিত পওয়ার ও মেয়ে সুপ্রিয়া সুলের মধ্যে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অজিত যখন টের পান, মেয়ের হাতেই এনসিপি-র উত্তরাধিকার তুলে দিতে চলেছেন শরদ, তিনি দল ভাঙেন। পুরনো নেতারা ফের এনসিপি জোড়া লাগানোর চেষ্টা করলেও অজিতের শর্ত, সুপ্রিয়ার অনুগামীদের আগে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। শরদ বলেছেন, সুপ্রিয়া শেষ কথা বলবেন। সুপ্রিয়া বলছেন, তাঁর এ সব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই।

এই লড়াইয়ে ব্যতিক্রম রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। রাহুলের ছেড়ে আসা ওয়েনাড় থেকে জিতে প্রিয়ঙ্কা সাংসদ। রাহুলের থেকে প্রিয়ঙ্কা বেশি কার্যকরী হয়ে উঠবেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার অনুগামী বা দু’জনের ‘টিম’-এর মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। কিন্তু দাদা-বোনের মধ্যে এখনও ব্যক্তিত্বের সংঘাত নেই। প্রিয়ঙ্কা তাঁর দাদাকে ‘তর্কপ্রিয় গাইড’ হিসেবে দেখেন। প্রিয়ঙ্কার মতে, ভাই-বোনের সম্পর্ক ফুলের বাগানের মতো। ভালবাসা, সম্মান ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নানা রঙের স্মৃতি, গল্প ও বন্ধুত্বের ফুল ফুটে থাকে। রাহুল লোকসভার মধ্যেই তাঁর বোনের গাল টিপে দেন। স্পিকার ওম বিড়লার ‘শাসন’-এরও পরোয়া করেন না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

K Chandrashekar Rao

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy