Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Abortion

নাবালিকার গর্ভপাতে নাম গোপনে জোর

পকসো আইনের ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, নাবালিকা নিগ্রহ অথবা শিশুদের হেনস্থার কোনও সংবাদ কেউ পেলে তা পুলিশকে জানানোটা আবশ্যিক।

গর্ভপাতের ঘটনা পুলিশকে রিপোর্ট করাটা আবশ্যিক।

গর্ভপাতের ঘটনা পুলিশকে রিপোর্ট করাটা আবশ্যিক। প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৫৪
Share: Save:

নাবালিকার গর্ভপাতের পরে তার পরিচয় গোপন রাখার বিষয়টিতে সব চেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। তিন বিচারপতির বেঞ্চ বুধবার জানিয়েছে, পকসো (প্রোটেকশান ফ্রম চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইন অনুযায়ী এমন গর্ভপাতের ঘটনা পুলিশকে রিপোর্ট করাটা আবশ্যিক। কিন্তু সেই রিপোর্টে নাবালিকার নাম ও পরিচয় দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। নাবালিকার গর্ভপাতের বিষয়ে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এ এস বোপানা এবং বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার এ দিনের রায়কে নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। তার একটি, নাবালিকার সারা জীবনের হেনস্থা ও লাঞ্ছনার কথা ভেবে পরিচয় গোপনের এই নির্দেশ।

পকসো আইনের ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, নাবালিকা নিগ্রহ অথবা শিশুদের হেনস্থার কোনও সংবাদ কেউ পেলে তা পুলিশকে জানানোটা আবশ্যিক। কেউ জেনেও পুলিশকে না জানালে তাঁর ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং আর্থিক জরিমানা হতে পারে। পুলিশের জুভেনাইল শাখা সব ধরনের শিশু নিগ্রহের ঘটনা নথিভুক্ত করে। সুতরাং গর্ভপাতের বিষয়টি পুলিশকে জানানোটা চিকিৎসকের অবশ্যকর্তব্য। কিন্তু বিচারপতিরা এ দিন নির্দেশে বলেছেন, চিকিৎসক পুলিশকে বিষয়টি জানালেও রিপোর্টে নাবালিকার নাম-পরিচয় জানানোর প্রয়োজন নেই।

গর্ভপাতের অধিকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিতে গিয়েই বিচারপতিরা এ দিন পকসো আইনের নানা ধারা এবং ভুক্তভোগী নাবালিকাদের প্রসঙ্গটিও উত্থাপন করেন। এই বয়সে বিয়ে বৈধ না-হওয়ায় আইনি ভাবে গর্ভপাতে নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার সুযোগ নিয়ে কালোবাজারি ফেঁদে বসেছে এক শ্রেণির হাতুড়ে চিকিৎসক ও বেসরকারি ক্লিনিক। বিচারপতিরা এ দিন বলেছেন, গর্ভপাতের মাধ্যমে অবাঞ্ছিত মাতৃত্ব থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার অধিকার অবিবাহিত এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদেরও রয়েছে। নাবালিকা দু’ভাবে অন্তঃসত্ত্বা হতে পারে। যৌন হেনস্থার শিকার হয়ে অথবা কিশোর বয়সের যৌন সম্পর্কের কারণে। রায়ে বিচারপতিরা বলেছেন, ‘কিশোর বয়সের যৌন সম্পর্কের বিষয়টিকে পকসো আইনে স্বীকার করাই হয়নি। কিন্তু তাতে কিশোর-কিশোরীদের যৌন সম্পর্ক আটকায় না। অনেক সময়েই তা থেকে অবাঞ্ছিত মাতৃত্বের পরিস্থিতি তৈরি হয়।’ রায়ের অন্য একটি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আমাদের দেশে যৌন-স্বাস্থ্য শিক্ষার অভাবের কারণে যৌন প্রবৃত্তি এবং গর্ভ এড়ানোর প্রকরণগুলির বিষয়ে কিশোর-কিশোরীদের একটা বড় অংশের সম্যক কোনও ধারণা নেই। অনেক সময়ে এই সম্পর্ক থেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আতঙ্ক ও জড়তার কারণে নাবালিকা অভিভাবকদেরও জানাতে দেরি করে। এমন ক্ষেত্রে গর্ভপাতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ বিচারপতিদের মতে, সমাজ ও পরিবেশ পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। নাবালিকাদের গর্ভপাতের অধিকার স্বীকৃত হলে এবং নাম-পরিচয় গোপন রাখাটা আইনসিদ্ধ হলে তাদের আর হাতুড়ের শিকার হতে হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abortion Supreme Court Minor Girls India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE