E-Paper

‘ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন হেনস্থার অস্ত্র হতে পারে না’

জোর করে ধর্মান্তরণের একটি অনুষ্ঠানে উপাচার্য রাজেন্দ্রবিহারী লাল ও অন্যান্য আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ এনে এফআইআর করা হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

উত্তরপ্রদেশের ধর্মান্তরণ বিরোধী আইনকে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হেনস্থা করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না— এই আইনে করা পাঁচটি এফআইআর খারিজ করে দিয়ে আজ এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেই অপরাধ সংগঠিত হয় না। এটা উত্তরপ্রদেশের ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন কিংবা ভারতীয় দণ্ডবিধি— কোনও ক্ষেত্রেই অপরাধ হিসেবে বিবেচিত নয়।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ প্রয়াগরাজের স্যাম হিগিনবটম ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার, টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর উপাচার্য ও কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে ‘উত্তরপ্রদেশ ধর্মান্তরণ বিরোধী আইন ২০২১’-এ করা অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে। জোর করে ধর্মান্তরণের একটি অনুষ্ঠানে উপাচার্য রাজেন্দ্রবিহারী লাল ও অন্যান্য আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ এনে এফআইআর করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত আজ সংশ্লিষ্ট এফআইআর-গুলি খারিজ করে দিয়েছে। ২০২২-এ করা এমনই একটি এফআইআর নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘অপরাধের বিরুদ্ধে করা আইনকে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হেনস্থা করার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা চলবে না। আর আইনরক্ষক সংস্থাগুলি ভুল তথ্যের ভিত্তি শুধু নিজেদের মর্জি মতো মামলা করবে— সেই ব্যাপারটাও মেনে নেওয়া যায় না।’’

এফআইআর-গুলি বিবেচনা করে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন’ বলে চিহ্নিত ব্যক্তিদের কেউই তাঁদের অভিযোগপত্র নিয়ে পুলিশের কাছে আসেননি। একটি এফআইআরে অভিযোগকারী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সদস্য— সেকথা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এই অভিযোগকারী আইন অনুযায়ী ‘ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি’র পর্যায়ে পড়েন না। উত্তরপ্রদেশের ধর্মান্তরণ বিরোধী আইনের অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি’ বলতে ধর্ম পরিবর্তন হওয়া ব্যক্তির আত্মীয়কে বোঝায়। তবে ২০২৪ সালে সেই আইনে সংশোধনী এনে যে কোনও ব্যক্তিকেই জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। শীর্ষ আদালত আজ বলেছে, বর্তমান মামলায় যে এফআইআর করা হয়েছে, তা ধর্মান্তরণ আইন সংশোধনের আগে করা হয়েছিল। ফলে সেই অভিযোগ গ্রাহ্য হবে না। বিচারপতি পাদরিওয়ালা বলেন, ‘‘এফআইআর-গুলি আইনগত ভাবে দুর্বল, পদ্ধতিগত ভাবে এতে ভুলত্রুটি রয়েছে, এছাড়া উপযুক্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করেও তা করা হয়নি। ফলে এই এফআইআর-গুলি বহাল রাখার অর্থ হল, বিচারব্যবস্থার সঙ্গে প্রতারণা করা।’’ অভিযোগ করার বিষয়ে পুলিশের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন বিচারপতিরা।

সংবাদ সংস্থা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Supreme Court of India Uttar Pradesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy