দেশের থানাগুলিতে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলিতে সর্বদা নজর রাখার জন্য আলাদা কন্ট্রোল রুম তৈরি করার প্রস্তাব দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ক্ষেত্রে মানুষের হস্তক্ষেপ এড়িয়ে যন্ত্রনির্ভর হওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট মনে করছে, সিসি ক্যামেরার সুইচ যে কেউ বন্ধ করে দিতে পারেন। কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এই নজরদারির কাজ চালানো হলে তেমন সম্ভাবনা থাকবে না বলেই মনে করছে সর্বোচ্চ আদালত। এই প্রক্রিয়ায় দেশের আইআইটি গুলি শামিল হতে পারেও বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, গত ৮ মাসে রাজস্থানে পুলিশ হেফাজতে থাকা ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে রাজ্যে শোরগোল পড়ে যায়। থানার ভিতরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে আনার দাবি জানানো হয়। ক্যামেরা খারাপ বা সেটির 'মেমোরি ফুল' হয়ে গিয়েছে ওই দাবি খারিজ করে দেয় পুলিশ। গত ৪ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন:
সোমবার বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চের তরফে বলা হয়, "বিষয়টা নজরদারির। আজ হয়তো নির্দেশ মেনে চলা হল। কাল আধিকারিকেরা হয়তো ক্যামেরার সুইচ বন্ধ করে দিলেন। তাই আমরা এমন একটি কন্ট্রোল রুমের কথা ভাবছি, যেখানে (সিসি ক্যামেরায় নজর রাখার জব্য) কোনও মানুষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পড়বে না। কোনও স্বাধীন সংস্থার মাধ্যমেও থানাগুলির সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চলতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট দেশের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সমস্ত থানায় সিসি ক্যামেরা লাগাতে বলেছিল। পাশাপাশি ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির দফতরেও সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সোমবার আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে সুপ্রিম কোর্টে জানান, কিছু রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সুপ্রিম-নির্দেশ মানলেও অনেকে মানেনি। এমনকি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিও এখনও সিসি ক্যামেরা সংক্রান্ত নির্দেশিকা মানেনি বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে দাভে জানান, কারও হস্তক্ষেপ ছাড়াই সিসি ক্যামেরাগুলিতে প্রয়োজনীয় নজরদারি চললে থানাগুলিতে পুলিশি অত্যাচার এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনায় লাগাম পরানো যাবে। সোমবার এই মামলায় রায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে।