চন্দননগরের বাঙালি পরিবারের রুশ বৌমা ও তাঁর পাঁচ বছরের ছেলের খোঁজ পেতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে ‘কূটনৈতিক যোগাযোগ’ কাজে লাগানোর নির্দেশ দিল। সুপ্রিম কোর্ট মনে করিয়েছে, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার পারস্পরিক আইনি সাহায্যের চুক্তি ও প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। রুশ বৌমা ভিক্টোরিয়া জ়িগালিনার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার জন্য অপহরণ ও অন্যান্য ধারায় দিল্লি পুলিশ মামলা করেছে। ফলে রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে সাহায্য করতে বাধ্য।
ভিক্টোরিয়া তাঁর পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে রাশিয়া পালিয়ে যাওয়ার পরে ভারতের তরফে রুশ সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া জানিয়েছে, ভিক্টোরিয়ার অবস্থান জানা যায়নি। সর্বোপরি সে দেশের আইন অনুযায়ী, রাশিয়ার নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া যায় না। ভিক্টোরিয়ার স্বামী সৈকত বসু তাঁর ছেলেকে উদ্ধারের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সৈকতের আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক বলেন, ‘‘সৈকত-ভিক্টোরিয়ায় ছেলে ভারতের নাগরিক। তার জন্ম ভারতে হয়েছিল।’’
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাট্টিকে মস্কোয় ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, ‘‘এটি আর নিছক আইনি বিষয় নয়। এখানে কূটনৈতিক যোগাযোগ প্রয়োজন।’’ কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, ভিক্টোরিয়ার নামে ‘ব্লু কর্নার নোটিস’ জারি হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে রাশিয়াকে ‘নোট ভার্বাল’ বা বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
চন্দননগরের সৈকত বসুর সঙ্গে রাশিয়ার ভিক্টোরিয়ার বিয়ের পরে সৈকতের পরিবার জানতে পেরেছিল, ভিক্টোরিয়ার বাবা রুশ গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি-র অবসরপ্রাপ্ত গুপ্তচর। ভিক্টোরিয়া বিয়ের পরে সৈকতের বাবা, প্রাক্তন ফৌজি অফিসারকে কলকাতায় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়ায় পরিবারের সন্দেহ হয়, ভিক্টোরিয়া নিজেও রুশ গুপ্তচর। সৈকত-ভিক্টোরিয়ার বিবাদের জেরে সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দেশে তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলে বাবা, মায়ের কাছে ভাগাভাগি করে থাকত। কিন্তু ৭ জুলাই ভিক্টোরিয়া ছেলেকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। দিল্লি পুলিশ জানায়, প্রথমে ভিক্টোরিয়া দিল্লি থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে বিহারে যান। সেখান থেকে ভারত-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে কাঠমান্ডু গিয়ে বিমান ধরে শারজা হয়ে রাশিয়া পৌঁছন। দিল্লি পুলিশ সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, বিহারের সামির আনসারি ভিক্টোরিয়াকে নেপালে যেতে সাহায্য করেছিল। সামিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়াকে আগাগোড়া কে সাহায্য করছিল, তার খোঁজও চলছে। এক জন নেপালি নাগরিকেরও সাহায্য নেন ভিক্টোরিয়া। দিল্লিতে রুশ দূতাবাসের কর্মীর দিক থেকে ভিক্টোরিয়াকে সাহায্যের দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দূতাবাসের কর্মীদের কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
পাঁচিল টপকে
নয়াদিল্লি, ২২ অগস্ট: ফের নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে সংসদ চত্বরে ঢুকে পড়লেন এক যুবক। আজ সকালে গাছ বেয়ে উঠে, ২০ মিটার উঁচু একটি পাঁচিল টপকে নতুন সংসদ ভবন চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করেন তিনি। নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে আসতেই যুবককে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই ঘটনার জেরে ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে সাংসদদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)