প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান যদি বয়স্ক বাবা-মায়ের দেখাশোনা না-করেন, তবে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে পারেন বৃদ্ধ দম্পতি। সম্প্রতি এক মামলায় তা স্পষ্ট করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজন মনে করলে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আইনের আওতায় এমন নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের।
৮০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ এবং তাঁর ৭৮ বছর বয়সি স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। নিজেদের বড় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন দম্পতি। বৃদ্ধ দম্পতির দাবি, বড় ছেলে আর্থিক ভাবে সচ্ছল। তাঁর একটি ব্যবসাও রয়েছে। অথচ বৃদ্ধ বাবা-মায়ের দেখভাল করেন না তিনি। মুম্বইয়ে দম্পতির নামে দু’টি বাড়ি রয়েছে। অভিযোগ, ওই দু’টি সম্পত্তিই বর্তমানে তাঁদের বড় ছেলে ব্যবহার করছেন। দম্পতি চাইলেও ওই বাড়িতে তাঁদের থাকতে দিচ্ছেন না বড় ছেলে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রথমে বয়স্ক বাবা-মায়ের সুরক্ষা সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন দম্পতি। দেখভাল বাবদ সন্তানের থেকে টাকা চেয়ে মামলা করেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে ছেলেকে বার করে দেওয়ার জন্যও আবেদন জানান তাঁরা। গত বছরের জুনে ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দেয়, মুম্বইয়ের ওই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে সন্তানকে। একই সঙ্গে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য মাসে ৩০০০ টাকা করে দেওয়ারও নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন:
পরে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বড় ছেলে। হাই কোর্ট জানায়, সন্তানকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের নির্দেশ ঠিক ছিল না। কারণ, এই মামলার ক্ষেত্রে দম্পতির বড় ছেলেও ষাটোর্ধ্ব। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে হাই কোর্ট সঠিক বিশ্লেষণ করেনি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে সময়ে মামলা রুজু হয়েছিল, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুলাই মাসে দম্পতির বড় ছেলের বয়স ছিল ৫৯ বছর। তাই এই মামলায় তাঁকে প্রবীণ নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করা যায় না। হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ওই বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে দম্পতির বড় ছেলেকে। দু’সপ্তাহের মধ্যে এই মর্মে লিখিত আকারে আদালতে জানাতে হবে তাঁকে।