ভার্চুয়ালি নয়, সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবকে! পথকুকুরদের মামলায় শুক্রবার এমনই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেই তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে দুই রাজ্যকে। শীর্ষ আদালত জানায়, পশ্চিমবঙ্গ এবং তেলঙ্গানা বাদে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবকে আগামী ৩ নভেম্বর সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, আদালতের নির্দেশের পরও কেন পদক্ষেপ নয়, তা ব্যাখ্যা করতে হবে তাঁদের।
গত শুনানিতেই বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ মুখ্যসচিবদের সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বেঞ্চের কাছে আবেদন করেন, যাতে সশরীরে হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় মুখ্যসচিবদের। ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন তাঁরা। তবে সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। পূর্বের নির্দেশই বহাল রাখল আদালত।
শুক্রবারের শুনানিতে বিচারপতি নাথ বলেন, ‘‘আমরা যখন তাঁদের (মুখ্যসচিব) আসতে বলি, হলফনামা দাখিল করতে বলি, তখন তাঁরা ঘুমিয়ে থাকেন। আদালতের নির্দেশের প্রতি কোনও সম্মান নেই। তাঁদের আসতেই হবে।’’ এখানেই তিনি থামেননি। বিচারপতি নাথ তুষারের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তাঁদের সশরীরে আসতে দিন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে আদালত সময় দিচ্ছে, কিন্তু সরকার নিয়ম তৈরি করে পদক্ষেপ করছে না।’’
আরও পড়ুন:
দিল্লিতে পথকুকুরের কামড়ের ফলে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। গত ২২ অক্টোবর শীর্ষ আদালত সেই মামলায় রায় দিতে গিয়ে তার পরিধি দিল্লিতে সীমাবদ্ধ রাখেনি। সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে মামলায় পক্ষ করে। রায়ে আদালত পথকুকুরদের সঠিক পদ্ধতিতে বন্ধ্যাত্বকরণ এবং প্রতিষেধক দেওয়ার কাজের উপর জোর দেয়। বলা হয়, সঠিক পদ্ধতিতে বন্ধ্যাত্বকরণ এবং প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ করতে হবে। তার পর আবার যেখান থেকে কুকুরদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের এই সংক্রান্ত হলফনামা সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা ছাড়া আর কেউ তা করেনি বলে অভিযোগ। তার পরেই সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
গত শুনানিতেও একই বিষয়ে রাজ্যগুলির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। হলফনামা দেওয়ার ব্যাপারে যে সমস্ত রাজ্য নীরব থেকেছে, তাদের ভর্ৎসনা করে আদালত মন্তব্য করেছিল, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও রাজ্য সরকার জবাব দিল না! আন্তর্জাতিক স্তরে আপনাদের দেশের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। দু’মাস দেওয়া হয়েছে। তা-ও কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।’’ আবার একই সুরে শুক্রবারও ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট।