সুপ্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া তিন সদস্যের কমিটির রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতেই মামলা করেছেন বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। সেই মামলার শুনানি থেকে এ বার নিজেকে সরিয়ে নিলেন প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। বুধবার তিনি জানান, নগদকাণ্ড এবং বিচারপতি বর্মার বিষয় নিয়ে তাঁর পূর্বসূরি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। এ হেন পরিস্থিতিতে তাঁর এই মামলার শুনানি করা উচিত হবে না, এমনই জানান প্রধান বিচারপতি গবই। তবে বিচারপতি বর্মার মামলা শোনার জন্য বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিচারপতি বর্মার পক্ষের আইনজীবী কপিল সিব্বল জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এখানে সাংবিধানিক প্রশ্ন রয়েছে।’’ তার পরেই প্রধান বিচারপতি গবই বলেন, ‘‘আমি মনে করি আমার পক্ষে এই বিষয়টি (বিচারপতি বর্মার মামলা) তোলা ঠিক হবে না। কারণ এই বিষয়ে আলোচনাতে আমিও অংশ ছিলাম। আমি একটি বেঞ্চ গঠন করব।’’
চলতি বছরে দোলের দিন দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনের গুদামে আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীরা আগুন নেবাতে গিয়ে আধপোড়া নোটের রাশি রাশি বান্ডিল উদ্ধার করেন। সেই থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। ওই বিচারপতিকে দিল্লি থেকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে বদলি করা হয়। ক্রমে মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালত ওই ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য হাই কোর্টের তিন বিচারপতিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। গত ৩ মে ওই অনুসন্ধান কমিটি একটি মুখবন্ধ রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন:
অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে অবসরগ্রহণের দিন কয়েক আগে বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খন্না। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিচারপতি বর্মাকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করার আর্জিও জানিয়েছিলেন। যদিও অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি। অনুসন্ধান কমিটির সেই রিপোর্টের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিচারপতি বর্মা। সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া বস্তা ভর্তি টাকার মালিক যে তিনিই, তা প্রমাণ করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। টাকা উদ্ধারের অভিযোগের সত্যতাও প্রমাণ করতে পারেনি। উল্টে ওই টাকা তাঁর নয়, তা প্রমাণের দায় বিচারপতি বর্মার উপরে চাপিয়েছে। সেই মামলার শুনানি থেকে নিজেকে এ বার সরিয়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।