মৃত্যু হল পুরীর রাস্তায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে যাওয়া সেই কিশোরীর। প্রায় ৭৫ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ভুবনেশ্বর এমস থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। শনিবার বিকেলে দিল্লি এমসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
কী কারণে ওই নাবালিকার গায়ে আগুন ধরেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৯ জুলাই। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ উঠে, তিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী তার রাস্তা আটকেছিল। কিছু ক্ষণ তর্কাতর্কি হওয়ার পরে ওই দুষ্কৃতীরাই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তবে পরে সংবাদপত্র ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, অগ্নিদগ্ধ ওই কিশোরী নাকি বয়ান বদল করেছে। পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, কিশোরী আগের বয়ান তুলে নিয়েছে। নাবালিকা জানিয়েছে, সে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ছিল। সেই কারণেই তিন হামলাকারীর গল্প ফেঁদেছিল।
তবে যে অবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছিল, তাতে সে নিজেই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়েছিল, এমনটা অনুমান করা কঠিন। কারণ, তার হাত বাঁধা ছিল। মুখে কাপড় গোঁজা ছিল। সেই অবস্থাতেই জ্বলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল কিশোরীকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, নাবালিকার সারা শরীর তখন আগুনে জ্বলছে। চিৎকারও করতে পারছিল না মেয়েটি। ওই অবস্থায় রাস্তা দিয়ে ছুটে যাচ্ছিল সে। স্থানীয়েরা যখন তাকে উদ্ধার করে আগুন নেবায়, তখন কোনও ক্রমে মেয়েটি জানিয়েছিল, তিন জন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
দগ্ধ অবস্থায় রাস্তায় ছটফট করছিল মেয়েটি। কয়েক জন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ভুবনেশ্বর এমসে। কিশোরীর চিকিৎসার জন্য ১৪ সদস্যের মেডিক্যাল দল গঠন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ভুবনেশ্বর এমস জানিয়ে দেয়, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অগ্নিদগ্ধ হওয়ার কারণে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল শরীরে। পুড়ে গিয়েছিল হাত-পা, পিঠের অংশও। পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় পরের দিনই (২০ জুলাই) এয়ারলিফ্ট করে ভুবনেশ্বর থেকে দিল্লি এমসে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। সেই থেকে দিল্লি এমসে ‘বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ব্লক’-এর বার্ন আইসিইউতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিল নাবালিকা। শনিবার বিকেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি লিখেছেন, দিল্লি এমসে সবরকম চেষ্টা করার পরেও কিশোরীকে বাঁচানো যায়নি। তার পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।