Advertisement
E-Paper

হাতে আঁকা তিমি, কিশোরী ঝাঁপাল লেকের জলে!

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো মারণ খেলায় মেতে নিজেকে শেষ করে ফেলতে চেয়েছিল রাজস্থানের জোধপুরের ওই কিশোরী। খেলার চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেও গিয়েছিল সে। বাকি ছিল শেষ পর্বটি। যেখানে গিয়ে বেছে নিতে হয় দু’টি পথ। হয় নিজের না হয় অন্যের জীবন কেড়ে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৫:৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

বাড়িতে বলেছিল, বাজারে যাচ্ছে। স্কুটার নিয়ে রাতেই বেরিয়ে যায় সে। কিন্তু, রাত বাড়তে থাকলেও ঘরে না ফেরায় খোঁজ শুরু হয় বছর সতেরোর কিশোরীর। শেষমেশ এলাকারই একটি লেক থেকে টেনে তোলা হয় তাঁকে। লেকের জলে ভিজে জবজবে কিশোরী তখনও বলে চলেছে, “এটা না করলে মা মরে যাবে।” আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে, তাঁর হাত চিরে আঁকা একটি তিমি মাছ।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো মারণ খেলায় মেতে নিজেকে শেষ করে ফেলতে চেয়েছিল রাজস্থানের জোধপুরের ওই কিশোরী। খেলার চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেও গিয়েছিল সে। বাকি ছিল শেষ পর্বটি। যেখানে গিয়ে বেছে নিতে হয় দু’টি পথ। হয় নিজের না হয় অন্যের জীবন কেড়ে নেওয়া। শেষমেশ নিজেকে শেষ করাই মনস্থির করেছিল ওই কিশোরী। সেই মতো সোমবার রাতে স্কুটার নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আর বাড়ির কাছের লেকেই ঝাঁপ দিতে চেয়েছিল সে।

আরও পড়ুন

কী ভাবে বুঝবেন ব্লু হোয়েল আপনার সন্তানকে টেনে নিচ্ছে কি না

স্ত্রী হরজিৎকে নয়, জেলে হানিপ্রীতকেই দেখতে চান ‘বাবা’

ওই কিশোরীর বাবা বিএসএফ-এ কর্মরত। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ বাড়িতে না ফেরায় আশপাশে খোঁজ শুরু হয় তাঁর। মোবাইলে কল করলে সেটা অচেনা কেউ ধরেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ জানায়, বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের মোবাইল ফোন রাস্তাতেই ফেলে দিয়েছিল ওই কিশোরী।

সেই রাতেই ওই কিশোরীকে দেখতে পান ওমপ্রকাশ নামের এক ব্যক্তি। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, পার্কে স্কুটার দাঁড় করিয়ে কাঁদছিল ওই কিশোরী। এর পর হঠাৎই লেকের দিকে হন হন করে হাঁটা শুরু সে। ওমপ্রকাশ বলেছেন, “আমার মনে হয়েছিল, হয়তো বা লেকের জলেই ঝাঁপ দিতে যাচ্ছিল ওই মেয়েটি। তাই তাঁর পিছনে ছুটতে শুরু করি। ছুটতে ছুটতেই মেয়েটির কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, ‘কী হয়েছে?’ সে বলেছিল, ‘আমার মা মরে যাবে।’ ” এর পরই আরও প্রশ্ন করা শুরু করেন ওমপ্রকাশ। কেন তাঁর মা মারা যাবে, কী হয়েছে— তা জানতে চান তিনি। ওমপ্রকাশ বলেন, “মেয়েটি জানিয়েছিল, তাঁর খেলার শেষ না করলে মা মারা যাবে।” এর পরই আচমকা একটা খাদের ধার থেকে লেকে ঝাঁপ দেয় কিশোরী। তাঁকে উদ্ধারের জন্য লেকের জলে ওমপ্রকাশও ঝাঁপ দেন। আশপাশের লোকজনও ছুটে আসেন। আসে পুলিশও। সকলে মিলে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন

মারণ খেলা ব্লু হোয়েল সম্পর্কে এই কথাগুলি জানেন তো?

গো মাংসে আপত্তি নেই কেরলে, দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

স্থানীয় পুলিশ আধিকারিক লেখরাজ সিহাগ বলেন, “১১টা নাগাদ আমাদের কাছে খবর আসে একটি মেয়ে কল্যাণ লেকের দিকে স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে স্পটে পৌঁছই আমরা। একেবারে শেষ মুহূর্তে লেক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁকে।” পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর হাতে একটি তিমি মাছের আকারে অনেকটা অংশ চেরা ছিল।

আরও পড়ুন

‘আমি মরে গেলে কষ্ট পাবে?’ মাকে জিজ্ঞেস করেছিল কিশোর মনোজ

মাত্র ১২ হাজার টাকাতেই পৌঁছে যান ইউরোপে

‘ব্লু হোয়েল’-এর কবলে পড়ে ইতিমধ্যেই দেশের নানা প্রান্তে তো বটেই বিশ্ব জুড়েই একশোরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই অনলাইন গেম-এ ৫০টি পর্ব পেরতে হয়। প্রথম দিকের পর্বে প্রতিযোগীকে নিজের হাত চিরে নানা আকার-অক্ষর তৈরি করা, লাউড মিউজিক শোনা, কবরখানায় সময় কাটানোর মতো কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। খেলার যত এগোতে থাকে ততই তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এমনকী বহুতল থেকে ঝাঁপ দেওয়ার মতো নির্দেশও পান তাঁরা। শেষ পর্বে এসে বেছে নিতে হয় যে কোনও একটা পথ। আত্মহনন অথবা অন্য কাউকে খুন করা। এই কিশোরী সেই পথেই হাঁটছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে।

Blue Whale Online Game Jodhpur Blue Whale Challeng
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy