E-Paper

বিধুড়ীকে লুকোতে তৎপর বিজেপি 

পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে বিধুড়ীর মন্তব্য নিয়ে প্রিয়ঙ্কা মুখ খোলায়। প্রিয়ঙ্কাকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিধুড়ী বলে বসেন, কালকাজি কেন্দ্রে তিনি জিতলে বিধানসভা এলাকার রাস্তা ‘প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার গালের মতো মসৃণ’ করে দেবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:২৮
রমেশ বিধুড়ী।

রমেশ বিধুড়ী। —ফাইল চিত্র।

প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা এবং অতিশী সম্পর্কে বিজেপি নেতা তথা কালকাজির প্রার্থী রমেশ বিধুড়ী কুরুচিকর মন্তব্য করে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বেজায় ফাঁপরে ফেলেছেন পদ্ম শিবিরকে। মহিলা ভোটের কথা মাথা রেখে বিধুড়ীকে কালকাজি থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দলের অন্দরে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, দল যে মহিলাদের সম্পর্কে করা অসম্মানজনক মন্তব্য কোনও ভাবেই সমর্থন করে না, সেই বার্তা দিতেই বিধুড়ী-প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিতে চলেছে গেরুয়া শিবির।

পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে বিধুড়ীর মন্তব্য নিয়ে প্রিয়ঙ্কা মুখ খোলায়। প্রিয়ঙ্কাকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিধুড়ী বলে বসেন, কালকাজি কেন্দ্রে তিনি জিতলে বিধানসভা এলাকার রাস্তা ‘প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার গালের মতো মসৃণ’ করে দেবেন। এই মন্তব্যকে গুরুত্বই দিতে চাননি প্রিয়ঙ্কা। ওয়েনাড়ের সাংসদের মতে, মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে এই সব মন্তব্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত হাস্যকর মন্তব্য। উনি নিজের গাল নিয়ে কখনও কিছু বলেননি। এ সব অপ্রাসঙ্গিক কথা। দিল্লিতে ভোট হচ্ছে, আমাদের উচিত মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলা।’’

এই বিতর্কের রেশ না কাটতেই তিনি ফের কুমন্তব্য করেন তাঁরই কেন্দ্রের আম আদমি প্রার্থী তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী সম্পর্কে। অতীতে অতিশী নিজে নামের পিছনে ‘মারলেনা’ পদবি ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছর ধরে তিনি সেই পদবি ত্যাগ করে কেবল অতিশী লেখেন। পদবি ত্যাগ করাকে কটাক্ষ করে বিধুড়ী বলেন, ‘‘অতিশী নিজের বাপ বদলে ফেলেছে।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক অতিশীর বাবা বর্তমানে শারীরিক কারণে চলৎশক্তিহীন। বিরোধীরা প্রশ্নে তোলেন, মহিলাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কুমন্তব্য বিজেপি কি আদৌ সমর্থন করে? পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত সমাজমাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে নেন বিধুড়ী। কিন্তু বিধুড়ী ভোটে লড়লে দিল্লির মহিলাদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে দল। সেই কারণে বিধুড়ীকে সরিয়ে দেওয়া উচিত কি না তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’টি বৈঠক করেছে দল। সূত্রের মতে, বিধুড়ীকে সরানোর পক্ষে দিল্লি ভোটের দায়িত্বে থাকা জয় পান্ডা। বিষয়টি নিয়ে ভোটে যাতে ফায়দা না তুলতে পারে বিরোধীরা, তাই বিধুড়ীর টিকিট বাতিল করে দেওয়ার পক্ষে দলের একটি বড় অংশ।

একান্তই যদি তাঁকে না-বসানো হয়, সে ক্ষেত্রে বিধুড়ীকে কালকাজি কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন দিল্লি বিজেপির নেতারা। কালকাজির মতো উচ্চবিত্ত এলাকায় গুর্জ্জর সমাজের নেতা বিধুড়ীর বিশেষ জনভিত্তি নেই। ওই বিধানসভা কেন্দ্রে মূলত বিত্তশালী পঞ্জাবি ও বাঙালিদের বসবাস। বিজেপি মনে করছে, শিক্ষিত, শহুরে এলাকায় বিধুড়ীর মতো বিতর্কিত নেতা যদি অতিশীর মতো শিক্ষিত নেত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড়ান, তা হলে আপের জয়ের সম্ভাবনাই বেড়ে যাবে। তাই অতিশীকে হারাতে ওই কেন্দ্রে এলাকার প্রাক্তন সাংসদ মীনাক্ষী লেখি, দিল্লি বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি যোগিতা সিংহের মতো শিক্ষিত, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারওকে দাঁড় করানোর কথা ভাবছে দল। পরিবর্তে গুর্জ্জর অধ্যুষিত তুঘলকাবাদ এলাকার কোনও কেন্দ্রে বিধুড়ীকে সরিয়ে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে দলের মধ্যে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Priyanka Gandhi Vadra Atishi Aam Aadmi Party Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy