Advertisement
E-Paper

এসপি’র ফোন থেকে পাকিস্তানে কথা, তবু রোখা গেল না হামলা!

পুলিশ সুপারের গাড়ি ছিনতাই করে হানা দিল জঙ্গিরা। পুলিশ সুপারের ফোন থেকে কথা বলল পাকিস্তানে। ফোন ট্যাপ করে তা নাকি জানাও গিয়েছিল। তাও রোখা গেল না হামলা? পাঠানকোটে জঙ্গি হামলার পর এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাউথ ব্লকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৬ ১৬:৫১
পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে যাতায়াতের রাস্তায় চিরুনি তল্লাশিতে নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: এএফপি।

পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে যাতায়াতের রাস্তায় চিরুনি তল্লাশিতে নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: এএফপি।

পুলিশ সুপারের গাড়ি ছিনতাই করে হানা দিল জঙ্গিরা। পুলিশ সুপারের ফোন থেকে কথা বলল পাকিস্তানে। ফোন ট্যাপ করে তা নাকি জানাও গিয়েছিল। তাও রোখা গেল না হামলা? পাঠানকোটে জঙ্গি হামলার পর এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে নর্থ ব্লকে।

পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে যত বেশি সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি করাই লক্ষ্য ছিল জঙ্গিদের। ভারতীয় বায়ুসেনার এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য দামি সরঞ্জাম ধ্বংস করার নির্দেশ আসছিল পাকিস্তান থেকে। জঙ্গিদের ফোন ট্যাপ করে এ কথা জানা গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। ভারত-পাক আলোচনার পথ ফের বন্ধ করতেই পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এমন মরিয়া হামলা বলে ভারত সরকার মনে করছে। হামলা চালিয়েছে জৈশ-ই-মহম্মদ। জঙ্গিরা পাকিস্তানের পঞ্জাব থেকেই এসেছিল বলে এনআইএ এখন নিশ্চিত। মুলতানের ভাওয়ালপুরে তারা বার বার ফোনে কথা বলেছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে সাউথ ব্লকে এ দিন জরুরি বৈঠকে বসেন। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এবং এই ধরনের যে কোনও হামলার চেষ্টা গোড়াতেই প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। জঙ্গিদের ফোন কল ট্যাপ করে খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে সাউথ ব্লক সূত্রের খবর। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার পুলিশ সুপারের গাড়ি ছিনতাই করে ফিল্মি কায়দায় হানা দিয়েছিল জঙ্গিরা। পুলিশ সুপারের সেলফোনটিও ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। তার পর সেই ফোন থেকেই নাকি পাকিস্তানে যোগাযোগ শুরু করে হামলাকারীরা। এনআইএ সূত্রের খবর ৩০ ডিসেম্বরই পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢোকে জৈশ-ই-মহম্মদের এই জঙ্গিরা। শুক্রবার তারা পুলিশ সুপারের গাড়ি ছিনতাই করে পাঠানকোটের দিকে হানা দেয়। পুলিশ সুপারের গাড়িতে চড়ে যাওয়ায় পথে কোথাও সমস্যায় পড়তে হয়নি এই জঙ্গিদের। তারা সেনা জওয়ানের ছদ্মবেশে থাকায়, সন্দেহ এড়ানো আরও সহজ হয়। কিন্তু পুলিশ সুপারের ফোন থেকে পাকিস্তানে ফোন করে কথা বলায়, ফোন ট্যাপ করে জঙ্গিদের গতিবিধি আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। তা সত্ত্বেও হামলা রোকা গেল না কেন? নিরাপত্তা বাহিনীর গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছে নর্থ ব্লক।

আরও পড়ুন:

বছর শুরুতেই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হানা, হত ৩ জওয়ান, খতম ৪ জঙ্গি

আত্মঘাতী জঙ্গিরা পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার পরও পাকিস্তানে বসে থাকা মূল চক্রীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছিল বলে জানা গিয়েছে। জঙ্গিদের কাছে বার বার নির্দেশ আসছিল ভারতীয় বিমানঘাঁটির দামি সরঞ্জাম আগে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর এমআই-২৫ ও এমআই-৩৫ হেলিকপ্টারগুলিই মূল টার্গেট ছিল জঙ্গিদের। এই হেলিকপ্টার গানশিপ তথা অ্যাটাক হেলিকপ্টার ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম বড় শক্তি। একেই যুদ্ধক্ষেত্রে ‘উড়ন্ত ট্যাঙ্ক’ বলে ডাকা হয়। ওই কপ্টারগুলি ধ্বংস করতে পারলে জঙ্গিরা বড় ধাক্কা দিতে পারত বায়ুসেনাকে। কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টোটাই। বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জওয়ানরা যখন জঙ্গিদের মুখোমুখি লড়ছেন, তখন এমআই-২৫ এবং এমআই-৩৫ কপ্টারগুলিও অভিযান শুরু করে দেয়। আকাশ থেকে হামলা শুরু হয় জঙ্গিদের উপর। ফলে অচিরেই জঙ্গিদের ছক ভেস্তে যায়। পরে চিরুনি তল্লাশিতেও কাজে লাগানো হয় ওই কপ্টারগুলিকেই।

দেখুন গ্যালারি:

কতটা শক্তিশালী ভারতের উড়ন্ত ট্যাঙ্ক?

পাক বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই হামলার কড়া নিন্দা করা হয়েছে। তবে পাকিস্তানের ভাওয়ালপুর থেকেই জঙ্গিরা ভারতে এসেছিল বলে যে দাবি ভারতের তরফে করা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে পাকিস্তান কোনও মন্তব্য করেনি। ফোন ট্যাপ করে জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের পরিবারের কথোপকথনও রেকর্ড করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। হামলা চালানোর আগে এক জঙ্গি তার মাকে ফোন করে আত্মঘাতী হামলা চালাতে যাওয়ার খবর দিচ্ছে, এমন কল রেকর্ডিংও গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। পাঠানকোট গুরুদাসপুর জুড়ে সুরক্ষাবলয় নিশ্ছিদ্র করে এখনও বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

National Pathankot terror attack SP's Cell Phone Pakistan Connection Call interception
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy