Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Citizen Ammendment bill

সিএএ: সুবিধা তৃণমূলেরও, মত বাম, কংগ্রেসের

সিএএ চালুর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিরোধিতায় মাঠে নেমে পড়েছেন। সিপিএম, প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, এতে বিজেপির মতো তৃণমূলেরও লাভ।

jairam ramesh

জয়রাম রমেশ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪ ০৭:৪২
Share: Save:

বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে মোদী সরকার লোকসভা ভোট শুরুর এক মাস আগে সিএএ চালু করেছে বলে কংগ্রেস মনে করছে। কিন্তু এই সিএএ নিয়ে বিতর্কের জেরে পশ্চিমবঙ্গেও সন্দেশখালি কাণ্ড, নিয়োগ দুর্নীতির মতো বিষয় থেকে নজর ঘুরে যেতে পারে বলে সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন। তাঁদের মতে, এতে তৃণমূল নেতৃত্বেরই লাভ।

পাশাপাশি সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেসের আশঙ্কা, সিএএ নিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের ফলে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ফের তৃণমূলকে এককাট্টা হয়ে সমর্থন করতে পারে। বাম নেতারা আইএসএফ, কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কেই ভাঙন ধরানোর আশা করছিলেন। সোমবার সিএএ চালুর পরেই কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছিল, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি কত টাকা চাঁদা পেয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সেই তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দেওয়ার পরেই মোদী সরকার তড়িঘড়ি সিএএ চালু করেছে। কংগ্রেস মনে করছে, সামগ্রিক ভাবেই রাহুল গান্ধী যখন বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যাকে তুলে ধরতে চাইছেন, কৃষক আন্দোলন চলছে, তখন বিজেপি নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে নজর ঘোরাতে চাইছে।

কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আমরা সিএএ-র বিরোধিতা করেছিলাম। কারণ, এতে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা ঝুলে রয়েছে। কিন্তু সরকার সংসদে সংখ্যার জোরে আইন পাশ করিয়েছিল। প্রশ্ন হল, সেই আইন চার বছর তিন মাস পরে, ভোটের ঠিক এক মাস আগে রূপায়ণ হচ্ছে কেন? এর একটাই উদ্দেশ্য। অমিত শাহের লক্ষ্য হল, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, কৃষক আন্দোলন থেকে নজর ঘোরানো। কারণ, সরকার জনসমর্থন হারানোর ভয় পাচ্ছে।’’

সিএএ চালুর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিরোধিতায় মাঠে নেমে পড়েছেন। সিপিএম, প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, এতে বিজেপির মতো তৃণমূলেরও লাভ। কারণ, এর ফলে সন্দেশখালির ঘটনা, তৃণমূলের নানা দুর্নীতি নিয়ে যে ক্ষোভ তুঙ্গে উঠছিল, তা থেকে নজর সরে যেতে পারে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে মতুয়াদের ভোট পেতে সিএএ এনেছে। উল্টো দিকে, মমতা ফের সিএএ-এনআরসি-র ফলে মুসলিমদের নাগরিকত্ব হারানোর ভয় দেখিয়ে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের পাশে এককাট্টা করতে চাইবেন। মাঝখান থেকে পশ্চিমবঙ্গে বাম, কংগ্রেস, আইএসএফ জোট বিপদে পড়তে পারে। বিজেপি, তৃণমূল দুই দলই লোকসভা ভোটকে ফের নিজেদের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই করে তোলার চেষ্টা করবে।

জাতীয় কংগ্রেসের নেতারা আবার বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল যে কৌশল নিচ্ছে, কেরলে সিপিএমও একই কৌশল নিচ্ছে। সিপিএম সিএএ-কে শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক বলে প্রচারে নেমেছে। সিপিএমের উদ্দেশ্য, কেরলে কংগ্রেসের ঝুলি থেকে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ককে নিজেদের দিকে টেনে নেওয়া। যাতে কেরলে কংগ্রেসের আসন কমিয়ে বামেদের আসন বাড়ানো যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE