সকাল ৮টা ৪৫ মিনিট। শেষ বার কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন পাইলট। পরবর্তী আধ ঘণ্টায় পাইলটের তরফ থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ ছিল না। কিন্তু চেন্নাইয়ের তাম্বরম বিমানঘাঁটি থেকে আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ারের দিকে উড়ে যাওয়া বিমানটা তখনও নিখোঁজ নয়। রেডারে তখনও টের পাওয়া যাচ্ছিল উপস্থিতি।
সকাল ৯টা ১২ মিনিট। ভারতীয় বায়ুসেনার এএন-৩২ বিমান তখনও বঙ্গোপসাগরের পৃষ্ঠ থেকে ২৩ হাজার ফুট উচ্চতায়। রেডার সঙ্কেতে এর পরই অস্বাভাবিকতা নজরে আসে। দ্রুত উচ্চতা কমছিল বিমানটির। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আকাশ থেকে হঠাৎ পড়তে শুরু করলে যেমন হয়, ঠিক সেই ভাবেই উচ্চতা কমছিল বিমানটার। অল্প ক্ষণের মধ্যেই রেডার থেকেও হারিয়ে যায় বায়ুসেনার এএন-৩২ বিমানটি।
ঠিক কী ঘটল? নিশ্চিত হতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ হর্ষ বর্ধন বায়ুসেনার এই বিমানটিকে নিয়ে খুব আশাবাদী নন। তিনি বললেন, ‘‘দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেল। এখনও বিমানটির খোঁজ নেই। পাইলটের তরফ থেকেও যোগাযোগ করার কোনও চেষ্টা নেই।’’ হর্ষ বর্ধন জানালেন, বায়ুসেনার এই সব বিমান খুব মজবুত হয়। ছোটখাট ঘটনায় এই সব বিমানের খুব একটা ক্ষতি হয় না। যদি এমন হয় যে বিমানটি কোথাও জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে, তা হলেও বিমানের যোগাযোগ পরিকাঠামো অক্ষত থাকবে বলেই ধরে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে পাইলট কোনও না কোনও ভাবে কন্ট্রোলের সঙ্গে অবশ্যই যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেন। হর্ষ বর্ধনের কথায়, ‘‘যতটা সময় কেটে গিয়েছে, তাতে আর খুব একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন: এখনও নিখোঁজ বিমান, বেনজির তল্লাশি অভিযানে ১৩ যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন
মেঘের ভিতর বিমান ঢুকে পড়লে কী বিপদ হতে পারে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেঘ যদি বজ্রগর্ভ হয়, তা হলে তার ভিতরে ঢুকে পড়া বিমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বিমান বিকল হয়ে যেতে পারে। আর মাঝ আকাশে বিমান বিকল হয়ে যাওয়ার অর্থ সকলেরই জানা।
গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) জে কে মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘বায়ুসেনার এই সব বিমানে বিপজ্জনক মেঘ চিনে নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। ফলে ওই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটা উচিত নয়। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে, কোনও সঙ্কটই অসম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy