Advertisement
২৩ জানুয়ারি ২০২৫

হিংসার বিরুদ্ধে সরব হুরিয়ত

গত বছর হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানি খতম হওয়ার পর থেকেই অশান্ত কাশ্মীর। কিন্তু অমরনাথ যাত্রীদের উপরে সাম্প্রতিক হামলার তীব্র নিন্দা করেছে কাশ্মীরি সমাজের সব অংশই। তখনও সেই নিন্দায় গলা মিলিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাও। আজ এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন তিন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও ইয়াসিন মালিক।

জম্মু-কাশ্মীরে বিক্ষোভ বার বারই এই রকম হিংসাত্মক হয়ে উঠছে। —ফাইল চিত্র।

জম্মু-কাশ্মীরে বিক্ষোভ বার বারই এই রকম হিংসাত্মক হয়ে উঠছে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

কাশ্মীরে হিংসার বিরুদ্ধে সরব হল বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত কনফারেন্স ও জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, ভারত কাশ্মীর নিয়ে ‘বিবাদ’ মেটাতে উদ্যোগী হলে তবেই এই হিংসা থামতে পারে।

গত বছর হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানি খতম হওয়ার পর থেকেই অশান্ত কাশ্মীর। কিন্তু অমরনাথ যাত্রীদের উপরে সাম্প্রতিক হামলার তীব্র নিন্দা করেছে কাশ্মীরি সমাজের সব অংশই। তখনও সেই নিন্দায় গলা মিলিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাও। আজ এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন তিন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও ইয়াসিন মালিক। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘কোনও পক্ষের হিংসাই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু ভারত যতক্ষণ না কাশ্মীরের মূল সমস্যাকে স্বীকার করবে ততক্ষণ এখানে হিংসা থামবে না।’’ ওই তিন নেতার মতে, ‘‘অমরনাথ যাত্রীদের উপরে হামলা একটি বীভৎস ঘটনা। কাশ্মীরি সমাজের সব অংশই এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেখে আমরা খুশি হয়েছি।’’ বিজেপি ও সংবাদমাধ্যমের একাংশকে অবশ্য খোঁচা দিতে ছাড়েননি ওই নেতারা। তাঁদের মতে, ‘‘যারা বিভাজনের রাজনীতি করে ও একটি এলাকার সব মানুষের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে প্রচার চালায়, তাদের এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’

আরও পড়ুন: কুলভূষণের মাকে ভিসা দেওয়ার ভাবনা

রাজ্য ও কেন্দ্রের কর্তাদের একাংশের মতে, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ওই নেতাদের নিয়ন্ত্রণেও নেই। সন্ত্রাস ও বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নয়া এক প্রজন্ম। অমরনাথ যাত্রীদের উপরে হামলার মতো ঘটনার পরে তাঁরা একঘরে হয়ে পড়বেন বলে হুরিয়ত নেতাদের মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই এই বিবৃতি দিয়ে কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন তাঁরা। দিল্লি আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করলে কাশ্মীরে হিংসা কিছুটা কমতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তবে কেন্দ্রের এক কর্তার মতে, ‘‘কাশ্মীরে জঙ্গিরা নিরীহ মানুষকে খুন করছে। হুরিয়ত নেতারা যতক্ষণ না তাদের কাজকর্মকে সন্ত্রাসের অ্যাখ্যা দিচ্ছেন, ততক্ষণ এই বিবৃতির বিশেষ মূল্য নেই।’’

আজ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হরতালে বিপর্যস্ত হয়েছে কাশ্মীরের জনজীবন। ১৯৩১-এ কাশ্মীরের ডোগরা রাজার সেনাদের গুলিতে নিহত ২২ জন কাশ্মীরির স্মরণে প্রতি বছর ১৩ জুলাই ‘শহিদ দিবস’ পালিত হয়। এ দিন সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে মিরওয়াইজকে আটক করে পুলিশ। তার পরেই হরতাল ডাকে হুরিয়ত।

হরতালের মধ্যেই পুরনো শ্রীনগরে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে অবশ্য যোগ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা ও কংগ্রেস নেতারা। সেখানে মেহবুবা বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক কাশ্মীর গড়তেই ১৯৩১ সালে ২২ জন বলিদান দিয়েছিলেন। এখন কিছু মানুষ সেই গণতান্ত্রিক কাশ্মীরের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। তাদের তৈরি আতঙ্কের পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।’’ মেহবুবার মতে, ‘‘যে ভাবে কাশ্মীরি সমাজের সব অংশ অমরনাথ যাত্রীদের উপরে হামলার নিন্দা করেছে, তা থেকেই বোঝা যায় কাশ্মীরিয়তের আদর্শ এখনও বেঁচে আছে।’’ শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে অবশ্য যোগ দেননি মেহবুবা সরকারের শরিক বিজেপি-র কোনও প্রতিনিধি।

অন্য বিষয়গুলি:

Hurriyat violence in Valley jammu and kashmir হুরিয়ত জম্মু ও কাশ্মীর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy