শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না হলে আগামী ১৩ জুলাই হিমাচলের রাজধানী শিমলায় পৌঁছে যাচ্ছেন বিরোধী দলের নেতারা। সে দিন ঘরোয়া আলাপচারিতা। ১৪ তারিখ আনুষ্ঠানিক বৈঠক। পটনার পরবর্তী ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এম কে স্ট্যালিন, নীতীশ কুমার, অরবিন্দ কেজরীওয়াল, শরদ পওয়ার, মেহবুবা মুফতি, অখিলেশ যাদব-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের। রাজনৈতিক সূত্রে এমনটাই খবর।
বিরোধী নেতাদের একাংশ মনে করছেন, ১৪ জুলাই বৈঠকটি রাখা হয়েছে সর্বসম্মত ভাবেই। তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, পটনার বৈঠকের একেবারে শেষে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পরে যবনিকা টানার কাজটি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বলেছিলেন, সবাইকে একজোট হয়ে ২০২৪ সালে বিজেপি-কে হারাতে হবে। পরবর্তী বৈঠকের স্থান হিসেবে শিমলার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। তখনই স্থির হয়ে যায়, যত দ্রুত সম্ভব পরের বৈঠকটি করতে হবে।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, শিমলা বৈঠকে এখনও গলার একটি ছোট ‘কাঁটা’ হয়ে রয়েছে অধ্যাদেশ নিয়ে আপ-কংগ্রেস দ্বন্দ্ব। বৈঠকে বসার আগে তা সমাধান করার জন্য যাতে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়, সে কারণেই পরবর্তী বৈঠকের তারিখ ১৪ই রাখা হয়েছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর।
তৃণমূল শীর্ষ সূত্রের তরফে জানানো হচ্ছে, পটনা বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘চা-বিস্কুটের’ সূত্রটি দিয়েছিলেন, তা যত দ্রুত বাস্তবায়িত হবে, আপ-কংগ্রেস জট কাটার সম্ভাবনা তত বেশি। ফলে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কেজরীওয়ালের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে এই নিয়ে কথা চলছে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, এক পক্ষ চায়ে ডাকলে তো হবে না। দু’পক্ষেরই সমস্যা সমাধান করার সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন। শিমলা বৈঠকের আগে তা ঘটাতেই হবে। তা না হলে বৈঠকে প্রত্যাশিত ফল পাওয়া যাবে না।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পটনার বৈঠকে বসে এক দিকে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গে আর অন্য দিকে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন, চায়ের কাপে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। সবাই যেহেতু দিল্লিতেই থাকেন, শীঘ্রই একদিন বসে চা-বিস্কুট খেয়ে বিবাদ মিটিয়ে নিন!
রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, আগামী ১৭ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হতে পারে। ঠিক তার আগে বিরোধীদের বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এক শীর্ষ বিরোধী নেতার মতে, নতুন লোকসভা গঠনের আগে এই বছরের বাদল অধিবেশনের পর মাত্র আর একটিই অধিবেশন (শীতকালীন) পড়ে থাকে। কারণ ভোটমুখী বছরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট অধিবেশন হয় না। ফলে বিরোধী রাজনীতির দিক থেকে এবারের অধিবেশনের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে। শিমলায় এ ব্যাপারেও রণকৌশল স্থির হবে। বিরোধীরা এখনও ১৭ তারিখ থেকে শুরু হতে চলা অধিবেশনে রাজ্যসভা ও লোকসভায় কক্ষ সমম্বয় করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ বলে খবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)