Advertisement
E-Paper

‘ভোলেবাবা’র অপার কীর্তি! যৌন নির্যাতনের অভিযোগে জেলে যান স্বঘোষিত গুরু, তার পরেই খোলেন আশ্রম

স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলেবাবা উত্তরপ্রদেশেরই বাসিন্দা। উত্তরপ্রদেশের এটা জেলার পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুর নাগরি গ্রামের এক কৃষকের বাড়িতে তাঁর জন্ম। আসল নাম সুরজপাল সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৬:১১
স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা।

স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা। —ফাইল চিত্র ।

হাথরসে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় নাম জড়ানো সুরজপাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরি ওরফে ভোলে বাবা বর্তমানে ‘ফেরার’। তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও বহু বিতর্কে নাম জড়়িয়েছে ভোলে বাবার। তাঁর ‘কীর্তি’ নাকি অপার! সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোলে বাবার বিরুদ্ধে অতীতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে আগরা, এটা, কাসগঞ্জ, ফারুখাবাদ এবং রাজস্থানেও একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এর আগে। তবে তার পরেও ‘বাবা’র জ্ঞান বিতরণে খামতি হয়নি।

স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবা উত্তরপ্রদেশেরই বাসিন্দা। উত্তরপ্রদেশের এটা জেলার পাতিয়ালি পঞ্চায়েতের বাহাদুর নাগরি গ্রামের এক কৃষকের বাড়িতে তাঁর জন্ম। আসল নাম সুরজপাল সিংহ। পড়াশোনা শেষ করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশে যোগ দেন সুরজ। প্রায় ১৮ বছর উত্তরপ্রদেশে পুলিশের ‘ইনটেলিজেন্স ইউনিট’-এর হেড কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। ভোলে বাবার অনুগামীদের দাবি, অতীতে গোয়েন্দা বিভাগের হয়েও তিনি কাজ করেছেন। কিন্তু ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য ১৯৯৯ সালে তিনি নাকি গোয়েন্দা বিভাগের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। চাকরি ছেড়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ সাকার হরি রাখেন সুরজ। সুরজপাল হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। এর পরে পরেই শুরু সৎসঙ্গের।

তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল ভোলে বাবা (যদিও তখনও তিনি ভোলে বাবা হয়ে ওঠেননি)-র বিরুদ্ধে। এর পরেই তাঁর চাকরি যায়। জেলেও যেতে হয়। জেল থেকে মুক্তির পরেই নাকি নিজেকে ‘সাকার বিশ্ব হরি বাবা’ হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন তিনি। পৈতৃক বাড়িতেই আশ্রম খোলেন। হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। দিনে দিনে ভক্তসংখ্যাও বাড়তে থাকে। এখন হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, দিল্লি-সহ গোটা ভারতে অসংখ্য ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে স্বঘোষিত এই ধর্মগুরুর।

এ ছাড়াও কোভিডকালে সৎসঙ্গের আয়োজন করে আইনি জটিলতায় নাম জড়ায় ভোলে বাবার। ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের ফারুখাবাদে একটি সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন স্বঘোষিত গুরু। তবে অতিমারির সময় বড় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। জেলা প্রশাসন শুধুমাত্র ৫০ জনকে সেই সৎসঙ্গে যোগদানের অনুমতি দিলেও জড়ো হয়েছিলেন নাকি ৫০ হাজার মানুষ। বিশাল জনসমাগমের জন্য এলাকাতে যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগও দায়ের হয়। সেই ভোলে বাবার নাম এ বার জড়িয়েছে হাথরসকাণ্ডেও।

কেউ দাবি করেছেন, স্বঘোষিত ধর্মগুরুর পদধূলি নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি হতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের হাথরসে। এফআইআর অনুযায়ী, অনুগামীরা যখন ভোলেবাবার ‘চরণধূলি’ পাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেছিল তখন তাঁর ‘সেবাদার’রা (নিরাপত্তারক্ষীরা) ধাক্কা দিয়ে ভি়ড় সরাতে শুরু করে। সেই সময়ই অনেকে একে অপরের উপর হুড়মুড়িয়ে পড়েন। বাকিরা তাঁদের উপর দিয়েই চলে যান। যদিও কেউ কেউ আবার দাবি করেছেন, ভোলে বাবার কনভয় যাওয়ার জন্য পুণ্যার্থীদের আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি চলে যেতেই গেট খুলে দেওয়া হয়, আর হুড়মুড়িয়ে বেরোনোর চেষ্টা করতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। পুণ্যার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে এমন নানা তথ্য উঠে আসছে।

অনেকের আবার দাবি, রাস্তার পাশে কয়েক ফুট নিচু নালা ছিল। ভিড়ের চাপে সেই নালায় একের পর এক পুণ্যার্থী হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন। আর তাঁদের উপর দিয়ে জনতার স্রোত চলে গিয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা হু-হু করে বেড়েছে। তবে এই ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন ভোলে বাবা।

Hathras Stampede Incident Hathras
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy