Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাশ্মীরে খতম পুলিশ খুনের পাণ্ডা বশির

জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে বাহিনীকে লক্ষ করে ইট ছোড়ে এক দল যুবক। বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে প্রায় ২৪ জন যুবক আহত হয়েছে।

নিহত বশির লস্করি।

নিহত বশির লস্করি।

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৮
Share: Save:

দিন পনেরো আগেই অনন্তনাগের আছাবলে তরুণ অফিসার ফিরোজ আহমেদ দার-সহ ৬ জন পুলিশকে খুন করেছিল জঙ্গিরা। নিহত পুলিশদের মুখও বিকৃত করে দেয় তারা। আজ তার বদলা নিল বাহিনী। অনন্তনাগেই সেনা ও পুলিশের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে খতম হল লস্কর ই তইবার কম্যান্ডার বশির লস্করি-সহ দুই জঙ্গি। বশিরই পুলিশ খুনের মূল পাণ্ডা বলে দাবি বাহিনীর। দু’পক্ষের গুলিবৃষ্টির মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন এক মহিলা-সহ দুই স্থানীয় বাসিন্দা।

জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে বাহিনীকে লক্ষ করে ইট ছোড়ে এক দল যুবক। বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে প্রায় ২৪ জন যুবক আহত হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অনন্তনাগের দিয়ালগাম এলাকায় ব্রেন্থি বাটপোরা গ্রামে বশির লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর পান গোয়েন্দারা। আজ ভোরে অভিযান শুরু করে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ। তল্লাশির সময়ে জঙ্গিরা বাহিনীকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। জবাব দেন জওয়ানেরাও। হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি শুরু করে সেনাবাহিনী।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি মুনির খান জানান, ওই গ্রামের তিনটি বাড়ি একেবারে পাশাপাশি। সেখানেই আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা। ওই বাড়িগুলির একটি থেকে আর একটিতে সহজে যাওয়া যায়। সেই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা এক এক সময়ে এক এক দিক থেকে জওয়ানদের উপরে হামলা চালাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের একটি বাড়িতে কোণঠাসা করে ফেলে বাহিনী। ডাকা হয় সেনার প্যারা কম্যান্ডোদের। তাঁরা ওই বাড়িতে ঢুকে জঙ্গিদের খতম করেন। পুলিশ প্রথমে দাবি করে, নিহত দ্বিতীয় জঙ্গির নাম আজাদ মালিক। বশির লস্করির মতো সে-ও অনন্তনাগের বাসিন্দা। পরে তারা জানায়, দ্বিতীয় জঙ্গিকে শনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সে পাকিস্তানি লস্কর জঙ্গি আবু জারার।

নিকেশ: পড়ে বশির লস্করি-সহ দুই লস্কর জঙ্গির দেহ। শনিবার অনন্তনাগে।

দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে নিহত হন বছর চুয়াল্লিশের তাহিরা বেগম এবং বছর একুশের সাদাব আহমেদ চোপান নামে দুই স্থানীয় বাসিন্দা। ছয় পুলিশের হত্যাকারী বশিরকে খতম করায় সেনা ও পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিজি এস পি বৈদ্য।

কাশ্মীরে সক্রিয় জঙ্গিদের তালিকায় উপরের দিকেই ছিল বশির লস্করির নাম। তার মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, অনন্তনাগের কোকেরনাগের বাসিন্দা বশির ১৯৯৯ সালে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে যায়। ওমর আবদুল্লা সরকারের জঙ্গি পুনর্বাসন প্রকল্পের অধীনে ২০১২ সালে আত্মসমর্পণ করে সে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত জেলে ছিল। ২০১৫ সালে ফের জঙ্গি কার্যকলাপ শুরু করে। বছর খানেকের মধ্যেই একটি দল তৈরি করে ফেলে। সেই দলে কয়েক জন পাকিস্তানি লস্কর জঙ্গিও ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE