জিএসটি নিয়ে ক্ষোভ জমেছে তাঁদের মধ্যে। সেই ক্ষোভে ভর করে এ বারে বিজেপির চিরাচরিত ব্যবসায়ী ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছেন রাহুল গাঁধী। জিএসটি চালু হওয়ার মুখে এটাই ব্যবসায়ীদের পাশে টানার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি।
দলীয় সূত্রের খবর, গত কাল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের সংগঠনের প্রসার নিয়ে তাঁর ভাবনা সবিস্তার পেশ করেন রাহুল। কিন্তু কৌশলগত কারণেই তা প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। এই বৈঠকেই রাহুল জানান, তিনিও অভিন্ন পণ্য-পরিষেবা কর তথা জিএসটির পক্ষে।
কিন্তু এর কয়েকটি ধারা নিয়ে এবং যে ভাবে এই কর কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁর। জিএসটি নিয়ে অসন্তোষ আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। এক তো এর রূপায়ণ নিয়ে এখনও বিস্তর সংশয় রয়েছে। তার উপরে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই সরকার যে ভাবে তড়িঘড়ি এটি চাপিয়ে দিচ্ছে, তাতেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। অথচ এই ব্যবসায়ীদেরই বরাবর সঙ্গে রেখে এসেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে অবিলম্বে কংগ্রেসের একটি পৃথক ‘সেল’ তৈরি করার দাওয়াই দিয়েছেন রাহুল। যাতে কংগ্রেস ওই ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে পারে। এবং পাশে টানতে পারে তাঁদের।
বৈঠকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও বলেন, মোদী সরকার যে পদ্ধতিতে জিএসটি-র রূপায়ণ করতে চাইছে, তিনি গোড়া থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ীরা যে এতে বিপাকে পড়বেন, তা-ও বলে আসছেন তিনি। তা শুনে রাহুলও উল্লেখ করেন, পরিষেবা কর চালুর পরে দশ বছর কোনও ভুল হলে ব্যবসায়ীদের কেবল জরিমানা হয়েছে। কখনও গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু জিএসটি-তে গ্রেফতার করার ধারাও রাখা হয়েছে। যা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মনে ক্ষোভ রয়েছে। এই সময়েই কংগ্রেস যদি ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে পারে, তা হলে তাঁদের আন্দোলনের শরিক হতে পারবে। তাঁদের কথা মানার জন্য সরকারের উপরে চাপ তৈরি করতে পারবে। আর মোদী সরকার দাবি না মানলে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাবে যে, কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে তাঁদের সুরাহার ব্যবস্থা করবে। একই সঙ্গে শিক্ষক, চিকিৎসক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের মতো পেশাদারদের নিয়েও পৃথক সেল গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রাহুল।
বিজেপির অবশ্য বক্তব্য, নিজেদের সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা রাহুল গাঁধী করতেই পারেন। কিন্তু জিএসটি-তে ব্যবসায়ীদের এমন কোনও অসুবিধা হবে না যে তাঁরা দলে দলে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস-মুখী হবেন। কারণ সরকার ব্যবসায়ীদের দিকগুলি মোটেই উপেক্ষা করছে না। জিএসটি কার্যকর করার কাজ কী পর্যায়ে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে গত সোমবার বৈঠক করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও জিএসটি রূপায়ণে সমস্যা আছে বলে তা আরও পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় অসঙ্গতি যা কিছু রয়েছে তা দূর করতে ১ জুলাইয়ের আগে আগামী রবিবার ফের বৈঠকে বসবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy