Advertisement
E-Paper

চোখের সামনে ঢলে পড়ল বাবা-ভাইয়ের মাথা, বিবস্ত্র শরীরে লজ্জার যন্ত্রণা! তবুও বাঁচলেন মণিপুরের দুই নারী

দুই নির্যাতিতার সারা শরীরে এক চিলতে শক্তি ছিল না। কিন্তু তার পরও হাল ছাড়েননি তাঁরা। রাতের অন্ধকারেই লজ্জা ঢেকে তাঁরা ফেরেন নিজেদের গ্রামে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৩ ২১:০৬
মণিপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ।

মণিপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ। —ফাইল চিত্র।

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় মণিপুরের দুই নারীর উপর হওয়া অত্যাচারের দৃশ্য দেখা গিয়েছে। যা দেখা যায়নি, তা হল ওই ঘটনার পর তাঁদের সঙ্গে কী হল? কী ভাবে অত্যাচারীদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন তাঁরা? কী ভাবে বেঁচে ফিরলেন? সংবাদ সংস্থা ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন মণিপুরের দুই নির্যাতিতা।

এক জনের বয়স ২১। তিনি কলেজছাত্রী। অন্য জনের বয়স তাঁর দ্বিগুণ, ৪২।গত ৪ মে গ্রামকে গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে যখন কুকিদের শেষ দফার দলটি গ্রাম ছাড়ছে, ঠিক সেই সময়েই হামলাকারীদের মুখোমুখি পড়ে যান তাঁরা। পুলিশ এসে সামলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি কিছু। হামলাকারীদের আরও বড় দল এসে তাঁদের উপর চড়াও হয়। তার পরেই দুঃস্বপ্নের শুরু।

২১ বছর বয়সি ওই কলেজ ছাত্রী জানিয়েছেন, পুলিশকে তাড়ানোর পরই ওই হামলাকারীরা তাঁদের ঘিরে ধরে নগ্ন হতে নির্দেশ দেয়। ওই ছাত্রী বলেছেন, ‘‘সে কথা শোনা মাত্রই তাঁর বাবা এবং তাঁর সদ্য দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেওয়া ভাই তাঁকে বাঁচাতে এসেছিলেন। মুহূর্তে তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। মাথায় ভারি অস্ত্রের ঘায়ে বাবা এবং ভাইয়ের মাথা চোখের সামনে ঢলে পড়তে দেখেন তিনি। সেখান থেকে তাঁরা আর ওঠেননি। ওই ছাত্রীকে তার পর বিবস্ত্র করে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। পথে যথেচ্ছ যৌন হেনস্থার শিকার হন তিনি। শেষে তাঁদের দু’জনকেই একটি ধান ক্ষেতে ফেলে দিয়ে চলে যায় হামলাকারীদের দলটি।

দুই নির্যাতিতার সারা শরীরে এক চিলতে শক্তি ছিল না। কিন্তু তার পরও হাল ছাড়েননি তাঁরা। রাতের অন্ধকারেই লজ্জা ঢেকে তাঁরা ফেরেন নিজেদের গ্রামে। কিন্তু সেখানে কেউ ছিলেন না। এর পর সারারাত হেঁটে তাঁরা পৌঁছন একটি জঙ্গলে সেখানে তাঁদের মতোই আরও কয়েকজন নির্যাতিতের সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। তাঁরাও হামলাকারীদের থেকে বাঁচতে জঙ্গলে গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরের দিন অর্থাৎ ৫ মে বেশ কয়েক ঘণ্টা হেঁটে তাঁরা পৌঁছন এক গ্রামে। কিন্তু সেই গ্রামও ছিল জনশূন্য। এর পর আরও একদিনের হাঁটাপথ পেরিয়ে তাঁরা পৌঁছে যান এক আদিবাসী গ্রামে। প্রায় ১২ দিন তাঁরা ছিলেন সেখানে। ১৮ মে ওই আদিবাসী গ্রামের প্রধান তাঁদের পুলিশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। যদিও তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি।

দুই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। তারা পদক্ষেপ করে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর। তবে ততদিনে এই লজ্জা গোটা দেশের মাথা নুইয়ে দিয়েছে।

Manipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy