লালকেল্লার পাশে জলমগ্ন রাস্তা। ছবি: রয়টার্স।
রাজধানীর রাস্তা যেন নদী! কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং যমুনা নদীর জলোচ্ছ্বাসে ভাসছে দিল্লি। বর্ষায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর অবস্থা আরও বেহাল। যমুনার জল এ বার ছুঁয়ে ফেলল লালকেল্লা। যমুনার জলে লালকেল্লার আশপাশ টইটুম্বুর। দেখে মনে হবে, লালকেল্লার পাশে বইছে যমুনা নদী। শুধু লালকেল্লা চত্বরই নয়। দিল্লির অন্য এলাকাগুলিরও একই হাল।
১৯৭৮ সালের বর্ষায় দিল্লিতে যমুনার জলস্তর ২০৭.৪৯ মিটার ছিল। বুধবার সেই রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। বুধবার দুপুর ১টায় দিল্লি রেলসেতুর কাছে যমুনার জলস্তর উঠেছিল ২০৭.৫৫ মিটার। যা গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার সেই জলস্তর আরও বাড়ল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যমুনার জলস্তর ছুঁয়েছে ২০৮.৬৬ মিটার। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে ক্রমাগত জল ছাড়া হচ্ছে নদীতে। যার জেরে যমুনার জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে।
#WATCH | Flood water reaches the Red Fort in Delhi. Drone visuals show the extent of the situation there. pic.twitter.com/q2g4M7yDMP
— ANI (@ANI) July 13, 2023
বৃষ্টিতে যমুনার জল বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে দিল্লির বহু এলাকা জলমগ্ন। কোথাও কোমর পর্যন্ত, কোথাও বুক পর্যন্ত জল জমে গিয়েছে। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। জমা জলের পরিমাণ ক্রমে বেড়েই চলেছে।
বানের জলে ভাসছে রাজধানী। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রয়েছে জি২০ সম্মেলন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে কম হারে জল ছাড়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
যমুনার জল বাড়তে থাকায় ওয়াজ়িরাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলা জল শোধনাগারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজধানী পানীয় জলের সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাসভবনের এলাকাতেও জল ঢুকে পড়েছে। শহরের নানা প্রান্তে দুর্যোগ কবলিতদের উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার পর্যন্ত সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। বেসরকারি সংস্থাগুলিতে বাড়ি থেকে কাজের (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) পরামর্শ দিয়েছেন কেজরীওয়াল।
দিল্লির বহু রাস্তা প্লাবিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাপক যানজটের ছবি ধরা পড়েছে রাজধানীর বুকে। শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্লাবিত হওয়ার কারণে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে দিল্লিবাসীকে। রাজধানীর মেট্রো পরিষেবাতেও প্রভাব পড়েছে। দিল্লি মেট্রো কর্পোরেশন (ডিএমআরসি) জানিয়েছে, যমুনার জল বাড়তে থাকায় যমুনা ব্যাঙ্ক মেট্রো স্টেশন বরাবর রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে স্টেশনে ঢোকার মতো পরিস্থিতি নেই। তাই ওই স্টেশনে ঢোকা এবং বেরোনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যমুনার উপরে চারটি মেট্রোরেল সেতু রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই সেতুর উপরে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সেতুর উপরে ঘণ্টায় ৩০ কিমি বেগে ট্রেন চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে মেট্রোর অন্য রুটে পরিষেবা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে ডিএমআরসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy