ছবি: সংগৃহীত।
সুপ্রিম কোর্টের চার প্রবীণ বিচারপতির ‘বিদ্রোহ’-এর পর আগামিকাল ফের খুলছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আজ দিনভর ব্যস্ত গতিবিধির পর সমস্যা মেটার আশ্বাসটুকুই এল মাত্র, কোনও সমাধানসূত্র মিলল না। এরই মধ্যে ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতিদের হাত শক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই আজ খড়্গহস্ত হলেন আরও চার প্রাক্তন বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে খোলা চিঠি লিখলেন এই চার প্রাক্তন বিচারপতি— সুপ্রিম কোর্টের পি বি সাওন্ত, দিল্লি হাইকোর্টের এ পি শাহ, মাদ্রাজ হাইকোর্টের কে ছান্দ্রু, বম্বে হাইকোর্টের এইচ সুরেশ। দাবি তুললেন, প্রধান বিচারপতি কাজ বণ্টনের ক্ষেত্রে ‘মাস্টার অব রোস্টার’ হলেও নিজের ইচ্ছামতো পছন্দের জুনিয়র বিচারপতির হাতে মামলা তুলে দিতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্ট ও বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা ফেরাতে স্বচ্ছ, বাস্তবসম্মত স্পষ্ট নিয়ম অবিলম্বে জরুরি। সেটি যত ক্ষণ না-হচ্ছে, সব স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা ৫ প্রবীণ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চের হাতেই তুলে দেওয়া উচিত।
সঙ্কট মেটাতে আজ বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি দল তিন ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতি জাস্তি চেলমেশ্বর, কুরিয়েন জোসেফ, মদন লোকুর-সহ মোট ন’জন বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করে। রাতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা। বৈঠক শেষে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মননকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘আগামিকাল স্বাভাবিক ভাবেই চলবে সুপ্রিম কোর্ট। সকলেই আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’ আবার আইনজীবীদের একাংশের মতে, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ‘ফুল কোর্ট’ ডাকলেই একমাত্র আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে। তা না-হলে এই সঙ্কট মেটানোর কোনও এক্তিয়ার বার কাউন্সিলের নেই। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিংহও এ দিন যান প্রধান বিচারপতির বাড়িতে। বিদ্রোহী এক বিচারপতি ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ‘‘সমস্যা মেটানো মধ্যস্থদের কাজ নয়। প্রধান বিচারপতিকেই সামনে এসে সে কাজ করতে হবে।’’
ঘরোয়া মহলে কংগ্রেসের এক আইনজীবী নেতা বলেন, ‘‘বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিজে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদীকে গাঁধীর ‘অবতার’ও বলেছিলেন। বিজেপি ঘুরপথে হস্তক্ষেপ করছে। ঠিক যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সচিব নৃপেন্দ্র মিশ্র গত কাল সেই চেষ্টা করেছিলেন।’’ পরিস্থিতি উস্কে দিয়ে দিল্লির বার অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয় কমিটি আজ জানিয়েছে, মামলা বণ্টন নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া নেই বলেই এই বিতর্ক। শীঘ্র পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলে সব বার অ্যাসোসিয়েশন পথে নামবে।
আইনজীবীদের একাংশের মতে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সব স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এখনও সহারা-বিড়লা ডায়েরি, মেডিক্যাল কলেজে ঘুষ কাণ্ড আর বিচারক লোয়ার মৃত্যুর মতো স্পর্শকাতর মামলা রয়েছে অরুণ মিশ্রের বেঞ্চে। যে ভাবে চাপ বাড়ছে, তাতে প্রধান বিচারপতিকে প্রবীণ বিচারপতিদের কাছেই এই সব মামলা পাঠাতে হবে। নইলে সমাধান হবে না। কারণ, ‘বিদ্রোহী’ বিচারপতিরা নিজেদের অবস্থানে অনড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy