E-Paper

‘নেতাজি’-তির তৃণমূলের, পাল্টা অসম বিজেপির

২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি হোজাইতে নেতাজিজয়ন্তীর সভায় তৎকালীন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখান থেকেই ভিডিয়োর অংশটি কেটে ব্যবহার করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৫ ২৩:১৫

—নিজস্ব চিত্র।

‘নেতাজি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী’। ‘উগ্রপন্থী ছিলেন ক্ষুদিরাম, বিপিনচন্দ্র পাল’। অসমের বিজেপি নেতা শিলাদিত্য দেবের একটি ভাষণের এমনই খণ্ডাংশ তুলে ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগছে তৃণমূল ও সিপিএম। তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং অন্যান্য ছোট-বড় নেতারা সামাজিক মাধ্যমে ওই ভিডিয়ো আপলোড করে বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীকে তোপ দাগছেন। বলা হচ্ছে, স্বাধীনতা সংগ্রামে কোনও অবদান না থাকা দলের এক ‘বিধায়কের’ মুখে ইতিহাসের এমন বিকৃতি মেনে নেওয়া হবে না। শিলাদিত্যকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবিও তোলা হচ্ছে।

আদতে, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি হোজাইতে নেতাজিজয়ন্তীর সভায় তৎকালীন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখান থেকেই ভিডিয়োর অংশটি কেটে ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে শিলাদিত্য বিধায়ক নন। তিনি অসমের ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। হঠাৎ করেই পুরনো ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়া ও তীব্র সমালোচনার মুখে দিল্লি থেকে শিলাদিত্য আনন্দবাজারকে বলেন, “নিছক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই হঠাৎ পাঁচ বছর আগের সম্পাদিত ভিডিয়ো তুলে ধরে বিজেপিকে আক্রমণ করতে চাইছেন বঙ্গের কিছু নেতা-নেত্রী। বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, অসমের রাজ্য-রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। অসমে ভোটে লড়তে নামা তৃণমূল জানেই না যে আমি এখন রাজ্যের বিধায়ক নই। ওই সভায় আমি যা বলেছিলাম- সেই বিষয়েও তাঁদের কিছু জানা নেই।”

আদতে কী বলেছিলেন শিলাদিত্য?

তিনি জানান, “নেতাজিজয়ন্তীতে ছাত্রছাত্রীদের কাছে তাঁর বীরত্বের কথা তুলে ধরেছিলাম। সেই প্রসঙ্গেই কংগ্রেসের নরমপন্থা ও চরমপন্থার কথা আসে। আমি বলেছিলাম, দেশকে স্বাধীন করতে চরমপন্থা বেছে নেওয়া নেতাজি ছিলেন ‘ব্রিটিশদের চোখে’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী। ‘ব্রিটিশদের চোখে’ ক্ষুদিরাম বা লাল-বাল-পালও ছিলেন উগ্রপন্থী। কিন্তু আমাদের কাছে তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাঁদের বীরত্বের জন্যেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।”

শিলাদিত্যের ক্ষোভ, “অসমের মতো রাজ্যে দাঁড়িয়ে, কোনও কিছুর পরোয়া না করে বাঙালির হয়ে বরাবর সরব হয়েছি আমি। এখন ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব পেয়ে রাজ্যের ২০টি জেলায় নিজের উদ্যোগে ২৩ জানুয়ারি ‘পরাক্রম দিবস’ পালন করার ব্যবস্থা করেছি। রবীন্দ্রজয়ন্তীতে অসমের বিভিন্ন জেলা ও ভাষাভাষীর ছয় হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে রবীন্দ্রনৃত্য ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে আমাদের উদ্যোগেই- যা আর কোনও রাজ্য দূরের কথা বাংলাতেও হয় না। এর পরেও আমায় নেতাজিকে অপমান করার জন্য কাঠগড়ায় তুলছে এমন দুটি দল যাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোনও অবদান থাকার প্রশ্নই নেই।” শিলাদিত্যের অভিযোগ, যখন সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে গোটা দেশের একজোট থাকার কথা, তখনই তৃণমূল-সিপিএম সত্য যাচাই না করেই ভাইরাল ভিডিয়োকে অস্ত্র বানিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে- এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Netaji

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy