Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

অখিলেশের কী হবে, ভেবে ঘুম নেই তৃণমূলের

ভোট হবে উত্তরপ্রদেশে। অথচ অখিলেশ সিংহ যাদবের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে উৎকণ্ঠার বিরাম নেই বাংলায় শাসক দলে! শেষ পর্যন্ত সমাজবাদী পার্টির ‘সাইকেল’ প্রতীক অখিলেশ পাবেন তো! দলীয় প্রতীকের দখল নিয়ে বাপ-বেটার বিবাদের নিষ্পত্তি নির্বাচন কমিশনে এখনও না হলে আর কবে হবে?

শঙ্খদীপ দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

ভোট হবে উত্তরপ্রদেশে। অথচ অখিলেশ সিংহ যাদবের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে উৎকণ্ঠার বিরাম নেই বাংলায় শাসক দলে! শেষ পর্যন্ত সমাজবাদী পার্টির ‘সাইকেল’ প্রতীক অখিলেশ পাবেন তো! দলীয় প্রতীকের দখল নিয়ে বাপ-বেটার বিবাদের নিষ্পত্তি নির্বাচন কমিশনে এখনও না হলে আর কবে হবে? এখানেই শেষ নয়, তৃণমূলের উদ্বেগ রয়েছে কংগ্রেস-অখিলেশ জোট সম্ভাবনা নিয়েও। কারণ, মনোনয়ন পেশ শুরু হতে আর ৭ দিনও বাকি নেই!

প্রশ্ন হল কেন? তৃণমূলের শীর্ষ সারির অধিকাংশ নেতা মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের ধাক্কা খাওয়া জরুরি। তাঁদের মতে, হিন্দি বলয়ের এই হৃদয়খণ্ডে যদি বিজেপি এ বার হুমড়ি খায়, তা হলে ২০১৯-এর ভোটের আগে আর মাজা শক্ত করা সম্ভব হবে না মোদীর পক্ষে! কারণ, এমনিতেই ‘অচ্ছে দিন’ আনতে পারেননি মোদী। বরং, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাঁর ব্যর্থতার পাল্লা ভারী। ফলে, উত্তরপ্রদেশ ভোটে বিজেপি পর্যুদস্ত হলে ‘মোদী ম্যাজিক’ উবে যাবে! সেই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা যেমন তাঁর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বেন, তেমনই দলের মধ্যেও সমালোচনায় পড়তে পারেন মোদী-শাহেরা।

তারই পাশাপাশি দলের এক শীর্ষ নেতা এ দিন অকপটে বলেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সাফল্য পেলে বিরোধীদের বিপদ অনিবার্য। তখন মোদীর বিরুদ্ধে রাহুল-মমতার যাবতীয় আক্রমণ ভোঁতা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তেমনই মোদী তখন দাবি করবেন, তাঁর নোট সিদ্ধান্তকে দু’হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছেন মানুষ। এবং সেই পরিস্থিতিতে প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আরও ধারালো অস্ত্র প্রয়োগে নামতে পারেন মোদী-শাহেরা। রোজভ্যালি-সহ বিভিন্ন ভুঁইফোঁড় অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তে সিবিআই তখন আরও সক্রিয় হতে পারে। উৎকণ্ঠা নিয়ে তৃণমূলকে তাই নজর রাখতে হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে।

তৃণমূল নেতৃত্বের আশা, বিজেপি-র ধাক্কা খাওয়া সম্ভব হতে পারে তখনই, যদি অখিলেশ-রাহুল গাঁধী হাত মেলান। কারণ, কংগ্রেস-সমাজবাদী জোট হলে তাঁদের অনুকূলে সংখ্যালঘু ভোটের মেরুকরণের সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া, সপা-র নিজস্ব যাদব ভোট যেমন রয়েছে, তেমনই দলিত ও উচ্চবর্ণের ভোট কিছুটা হলেও পাওয়ার কথা কংগ্রেসের। দু’দলের এই রসায়নেই বিজেপি পিছলে যেতে পারে বলে আশা করছেন তৃণমূল নেতারা।

তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, মূলত সেই কারণেই মুলায়ম অখিলেশকে দল থেকে বহিষ্কার করার দিনই উত্তরপ্রদেশের তরুণ মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন মমতা। তাঁকে সাহস জুগিয়ে বলেছিলেন, চিন্তা নেই, এই ধর্মযুদ্ধে তোমারই জয় হবে! সমাজবাদীর সাইকেল প্রতীক যাতে অখিলেশই পান, মূলত তার জন্যই আগ্রহী তৃণমূল নেতারা। কেন না তাঁরা মনে করছেন, মুলায়ম আদতে বিজেপি-র হাতে তামাক খাচ্ছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে আর্যাবর্তের ‘নেতাজি’ কোনও ভাবেই রাজি নন। ফলে, তাঁর হাতে সমাজবাদী পার্টির রাশ চলে গেলে উত্তরপ্রদেশে চতুর্মুখী লড়াই অবধারিত। সেই অবস্থায় ড্যাং ড্যাং করে জিতে যেতে পারে বিজেপি।

ভিন্ রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে এ রাজ্যের শাসক দলের এমন উদ্বেগ দেখে বিজেপি-র এক নেতার মন্তব্য, ‘‘সমাজবাদীর সাইকেল তো এখন আটকে আছে। মমতা চাইলে সবুজ সাথীর দু’টো সাইকেল ওদের দিয়ে আসতে পারেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Mamata Banerjee Akhilesh Yadav
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE