বাড়ির উঠোনে সাপের জন্ম হয়েছে বলে ওই পরিবারের কাউকে সে ছোবল মারবে না, এমনটা ভেবে থাকলে তা মস্ত বড় ভুল! আর পাকিস্তানকে কোনও রকম সাহায্য করলে আদতে তা সন্ত্রাসবাদীদেরই সহায়তা করা হয়। সোমবার ঠিক এই ভাষাতেই দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠকে পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন সংসদীয় দলের প্রতিনিধি তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নত করার প্রশ্নই নেই। ভারতের একতাকে ভাঙা যাবে না। আর জঙ্গিদমনের প্রশ্নে শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বকে হাতে হাত রেখে লড়াই করতে হবে বলে মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ।
বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে উপমহাদেশে ঘুরছে সংসদীয় প্রতিনিধি দল। একটি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয় ঝা। জাপান ঘুরে রবিবার দক্ষিণ কোরিয়া পৌঁছেছে দলটি। ওই দলে রয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধি অভিষেক। রবিবার সোলে সেখানকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারত-দক্ষিণ কোরিয়ার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে পাকিস্তানকে তুলোধনা করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বকে বলতে চাই, পাকিস্তানকে সমর্থন করার অর্থ হল সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাড়ির উঠোনে সাপের জন্ম হয়েছে বলে কেউ যদি আশা করেন যে, সেটি কেবল প্রতিবেশীকেই কামড়াবে, তা হলে ভুল। এক বার সেই সাপকে ছেড়ে দিলে, সে যাকে ইচ্ছা তাকে ছোবল মারবে। কারণ, বিষধর বিষধরই থাকে।’’ তৃণমূল সাংসদ ক্ষোভপ্রকাশ করে এ-ও বলেন, ‘‘পাকিস্তান তাদের নিজস্ব ভূমিতে জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে। মদত দিচ্ছে।’’
অভিষেক জানান, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানা কেবল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য চিন্তার। তিনি দুই দেশের অর্থনীতির তুলনা করেছেন বিশ্বমঞ্চে। অভিষেকের কথায়, ‘‘ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনীতির গতির দিকে তাকালেই দেখা যাবে, দুই দেশের অর্থনীতির আকাশ-পাতাল ফারাক। পাকিস্তান যখন নিজেদের অর্থনৈতিক সঙ্কটের সঙ্গে লড়াই করছে, তখন ভারত লাফিয়ে লাফিয়ে উন্নতি করেছে। আর পহেলগাঁওয়ের ঘটনা প্রমাণ করল যে ওরা (পাকিস্তান) ভারতীয় অর্থনীতির উন্নয়নকে ভেঙে ফেলতেই হামলা হয়েছে। এই বার্তা আমরা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’’
আরও পড়ুন:
২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার উদাহরণ টেনে অভিষেক জানান, ১৬৬ জন নিরপরাধ মানুষকে খুন করেছিল জঙ্গিরা। মৃতদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন বিদেশি নাগরিক। তদন্তে উঠে আসে মূল চক্রীর বড় হয়ে ওঠা থেকে জঙ্গি-প্রশিক্ষণ, সবটাই পাকিস্তানের মাটিতে হয়েছে। তাই সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতেই হবে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পাল্টা কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কথা উল্লেখ করেছেন অভিষেক। তিনি জানান, কেন্দ্রের সমস্ত পদক্ষেপে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে পাশে রয়েছে তৃণমূল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে পাশে চান তিনি। অভিষেকদের এই প্রতিনিধিদল এর পর যাবে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর।