দিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ ক্যাম্প-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাংলাভাষীদের হেনস্থা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সংসদের বাদল অধিবেশনে সরব হবে। তার আগে ওই ক্যাম্পে বসবাসকারী কোচবিহারের মানুষদের নিয়ে দিল্লিতে ধর্নার বসার পরিকল্পনা করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার রাজ্যসভার তিন তৃণমূল সাংসদের প্রতিনিধি দল বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ ক্যাম্পে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সম্প্রতি সেখানকার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের জলের জোগান নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে। জয় হিন্দ ক্যাম্পের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই কোচবিহারের দিনহাটার মানুষ। কিছু অসমের পরিযায়ী শ্রমিকও রয়েছেন। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই এ বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের অভিযোগ, বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যেই বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি সন্দেহে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ নিয়ে প্রচার গড়ে তুলতে চাইছে তৃণমূল।
রবিবার মমতার নির্দেশেই রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, সুখেন্দুশেখর রায় ও সাকেত গোখলে ঘটনাস্থলে যান। সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘‘কয়েকশো হতদরিদ্র পরিবার গত তিন দশক ধরে চারধারে জঞ্জালের স্তূপের মধ্যেে বাস করেন। আশি শতাংশ পেশায় জঞ্জাল কুড়োনোর কাজ করেন। তাঁরা দুই-তিন দশক আগে কোচবিহারের দিনহাটা থেকে এসেছেন। প্রায় ৬০ বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বিত্তশালীদের সঙ্গে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির আইনি মামলা চলছে। সেই জমির একাংশে এই পরিযায়ী শ্রমিকরাবাস করেন। কয়েক দিন আগে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে সরকারি কর্তাব্যক্তিরা সব ঝুপড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জলও বন্ধ করে দেয়।’’ সুখেন্দুশেখরের প্রশ্ন, দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে ও উপকণ্ঠেএমন বেশ কিছু বস্তি রয়েছে। কোথাও দিল্লি সরকার এমন অমানবিক পদক্ষেপ করেনি। এখানে কেন? শুধু মানুষগুলো বাংলায় কথা বলেন বলে? তৃণমূলের প্রশ্ন, অন্য কোনও রাজনৈতিক দল কেন জয় হিন্দ ক্যাম্পের মানুষের পরিস্থিতি দেখতে গেলেন না?
জয় হিন্দ ক্যাম্প ঘুরে আসার পরে তৃণমূল সাংসদরা গোটা পরিস্থিতি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানান। সূত্রের খবর, তার পরেই দিল্লিতে এই জয় হিন্দ ক্যাম্পের বাসিন্দাদের নিয়ে ধর্নায় বসার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, দল রাজ্যের মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এ নিয়ে সংসদেও তৃণমূল সরব হবে। কংগ্রেস, বাম বা অন্য কোনও দলের নেতারা কেন জয় হিন্দ ক্যাম্পে যাননি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলবে তৃণমূল নেতৃত্ব।কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী অবশ্য এ দিন রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠিয়ে ওড়িশা, মহারাষ্ট্র-সহ একাধিক রাজ্যে কর্মরত বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হয়রানি, বেআইনি আটক ও নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)