Advertisement
E-Paper

কেন্দ্রের সম্মতি ছাড়া রাজীব হত্যায় রেহাই নয়: শীর্ষ কোর্ট

রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের শাস্তি মকুব করা হবে কি না, জয়ললিতার সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। শীর্ষ আদালতের রায়, এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সম্মতি নিতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৫

রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের শাস্তি মকুব করা হবে কি না, জয়ললিতার সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। শীর্ষ আদালতের রায়, এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সম্মতি নিতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ রায় দিয়েছে, রাজীব হত্যাকারীদের শাস্তি মকুবের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছিল। রাজীব গাঁধীর সাত হত্যাকারীর শাস্তি মকুব করে তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তামিলনাড়ুর জয়ললিতা সরকার। প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ এ ক্ষেত্রে রাজ্যের ক্ষমতার সাংবিধানিক দিকটি খতিয়ে দেখছিল। আজ আদালতের রায়, ‘‘যদি কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তের ভার থাকে, তা হলে রাজ্যের আইনেও একতরফা শাস্তি মকুব করার ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই।’’ এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে আদালতের রায়। এই ক্ষেত্রে আলোচনার অর্থ আসলে যে সম্মতি নেওয়া, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতিরা।

রাজীব হত্যায় দোষী সাব্যস্ত সাত জনের মধ্যে সন্থান, মুরুগান ও আরিভু এখন ভেলোরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত অন্য চার জন, নলিনী, রবার্ট পায়াস, জয়কুমার ও রবিচন্দ্রন শ্রীপেরামপুদুরের জেলে রয়েছে। গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট সন্থান, মুরুগান ও আরিভুর মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করে দেয়। যুক্তি ছিল, তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। শাস্তি থেকে রেহাই দেওয়ার বিষয়টি উপযুক্ত সরকারের উপরে ছেড়ে দেয় আদালত। এই রায়ের সুযোগে জয়ললিতা সাত জনকেই জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তদানীন্তন ইউপিএ সরকারের আপত্তিতে দু’দিন পরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মুক্তির আদেশে স্থগিতাদেশ জারি করে। যুক্তি ছিল, রাজ্য সরকার আইনি প্রক্রিয়া মেনে সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর পরে রাজ্যের অধিকারের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠিত হয়। বেঞ্চের সামনে প্রশ্ন ছিল, যখন কোনও আদালত প্রাণদণ্ডের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন করছে, তখন কোনও সরকার সেই শাস্তি থেকে দোষীকে রেহাই দিতে পারে কি না। আদালতের রায়, যখন যাবজ্জীবন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তখন কোনও রেহাইয়ের প্রশ্ন আসছে না। সংবিধান অনুযায়ী, একমাত্র রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপাল কাউকে শাস্তি থেকে রেহাই দিতে পারেন। সাংবিধানিক বিষয়ে রায় দিলেও রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের ভাগ্য নির্ধারণের বিষয়টি তিন সদস্যের বেঞ্চের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে মনমোহন ও মোদী সরকারের অবস্থানের মধ্যে বিশেষ ফারাক ছিল না। মনমোহন সরকারের যুক্তি ছিল, তামিলনাড়ু সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। মোদী জমানাতে সলিসিটর জেনারেল রঞ্জিত কুমার আদালতে যুক্তি দেন, ‘‘বিদেশে ষড়যন্ত্র করে আমাদের দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা বিদেশিদের ষড়যন্ত্র কার্যকর করে। তাদের ক্ষেত্রে কোনও ক্ষমা বা করুণাই দেখানো সম্ভব নয়।’’ আজ কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, ‘‘জয়ললিতা যে ভাবে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করতে চাইছিলেন, তা লজ্জাজনক। রাজীব গাঁধীর হত্যাকারীদের শাস্তির বিষয়টি এত লঘু হতে পারে না।’’

tamil nadu centre concurrence remission rajiv gandhi killers assassination supreme court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy