ক্যাডেল জিনসেন রাজা। ছবি: সংগৃহীত।
রাত তখন অনেক। কেরলের অভিজাত নাথেনকোড এলাকায় অনেকেই গভীর ঘুমে। হঠাৎই তীব্র পোড়া গন্ধে ঘুম ভেঙে যায় কয়েক জনের। তাঁরা দেখেন, পাশের বাংলোতে আগুন লেগেছে। ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে পাড়া। সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেওয়া হয়।
দমকলকর্মীরা সেই বাংলোতে ঢুকে অবাক। বাংলোর ভিতরে পড়ে রয়েছে চারটি দেহ। তার মধ্যে তিনটি প্রায় দগ্ধ হয়ে গিয়েছে। আর একটি দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন অবস্থায় একটি ব্যাগে পোরা। বাড়ির একমাত্র ছেলে ক্যাডেল জিনসেন রাজার খোঁজ নেই। গত সোমবার তিনঅনন্তপুরম স্টেশনে খোঁজ মিলেছে তাঁর। মা-বাবা-বোন ও কাকিমাকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন
ফাঁসি দেওয়ার ফল কী হবে, ভেবে নিক পাকিস্তান: চরম হুঁশিয়ারি সুষমা স্বরাজের
ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ, ওই বাংলোর থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারায়ি বিজয়ন-সহ আট ক্যাবিনেট মন্ত্রীর বাসভবন। কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই যে এ রকম এক অপরাধ ঘটে যেতে পারে তা ভেবেই শিউরে উঠছেন পড়শিরা।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনঅনন্তপুরমের অভিজাত এলাকাতে মা-বাবা-বোন ও কাকিমা ললিতার সঙ্গে থাকতেন বছর তিরিশের ক্যাডেল। বাবা রাজ থঙ্কম (৬০) পেশায় অধ্যাপক ছিলেন। মা জিন পদ্মা (৫৮) স্থানীয় হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডন্ট, বোন ক্যারল (২৫) মেডিক্যাল ছাত্রী ছিলেন। ক্যাডেল মেডিক্যাল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতেন। তবে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হওয়ায় মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দেশের ফিরে আসেন তিনি। তাঁদের বাংলো থেকে মা-বাবা-বোনের দগ্ধ দেহ মিলেছে। কাকিমা ললিতার (৭০) দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা অবস্থায় একটি ব্যাগে ঢোকানো ছিল। পচাগলা অবস্থায় ছিল সেটি। ওই বাংলো থেকে রক্তমাখা চাপাতি ও কুড়ুল উদ্ধার করেছে পুলিশ। তা ছাড়া, আধপোড়া জামাকাপড়-সহ প্লাস্টিক ও একটি লোহার রডও মিলেছে। সব দেখে পুলিশের অনুমান, পরিকল্পিত ভাবে এ কাজ করেছেন ক্যাডেল।
পুলিশের দাবি, জেরায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাডেল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, পুলিশে ওই যুবক জানিয়েছেন, ডাকিনীবিদ্যা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতেই খুন করেছেন তিনি। দেহ থেকে আত্মাকে আলাদা করতে নাকি এ কাজ করেছেন। ক্যাডেলের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে তদন্তকারী দলে এক মনোবিদকেও রাখা হয়েছে। ক্যাডেলকে জেরা করবেন ওই মনোবিদও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy