ছবি: পিটিআই।
আকবর রোডের ক্যান্টিনে পাতে ফেলার আগেই আজ শেষ হয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশীয় ঘরানার গরম জলেবি আর বাদাম দেওয়া ক্ষীর!
৬ এ, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের ভোজনালয়ে ঘুরছে নুন, চিনি, লেবু দেওয়া সরবৎ— ধ্বস্ত শরীরকে চাঙ্গা করার জন্য!
২৪, আকবর রোডে কংগ্রেস সদর দফতরে ঢোকার অন্তত ১ কিলোমিটার আগে লম্বা লাইনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে হাঁটতে হচ্ছে না হোক এক কিলোমিটার।
দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির রাজকীয় পার্টি অফিসের পার্কিং লটে মাছি তাড়ানোরও লোক নেই আজ। অন্য দিন যেখানে গাড়ি রাখা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। লোকসভা, বিধানসভা মিলিয়ে ১৫টি উপনির্বাচনের ফলাফলের পর আজ দুই দলের দফতরে আবহাওয়া একেবারে বিপরীত।
লোকসভা ভোট এখনও বহু দূর। কিন্তু কংগ্রেস সদর দফতরে ওবি ভ্যান, রাহুলের ছবিওয়ালা পোস্টার বিক্রেতা, বিভিন্ন রাজ্যের নেতাকর্মীর ভিড়, ক্যামেরাম্যানের দাপটে তা কে বলবে! রাহুল-সনিয়া এই মুহূর্তে বিদেশে রয়েছেন। কিন্তু লম্বা বারান্দার বিভিন্ন অফিস ঘরের দ্বার অবারিত। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র থেকে আসা বিভিন্ন স্তরের কংগ্রেস নেতা (পরনে সদ্য কেনা নিপাট কুর্তা-পাজামা) ও কর্মীদের ঢল না হলে সামলানো যাচ্ছে না। মুখপাত্র তথা এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দৃশ্যতই হিমসিম খাচ্ছেন! ডেস্কটপের টেবিলের পাশে ফাইলপত্র সরিয়ে জমছে ফুলের পাহাড় আর লাড্ডুর প্যাকেট। গত কাল সন্ধ্যায় জ্বালানো আতসবাজির ছাই আর পোড়া কাগজ অফিস চত্বরের সবুজ লন থেকে সরাতে ‘স্বচ্ছতার অভিযান’ আজ রাহুল গাঁধীর অফিসেই!
অথচ দুপুর দু’টোর সময়েও বিজেপির মিডিয়া সেল-এ শুধুই নৈঃশব্দ। গুটিকয়েক কর্মী ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর ঘুরছে জল্পনার ফিসফাস— নীলা কি তাহলে সহ্য হল না শীর্ষ নেতাটির! এই উপনির্বাচন উপলক্ষে দলীয় নেতাদের আঙুলে ক্রমবর্ধমান আংটির সংখ্যা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আলোচনা চলছিল। বিজেপির এক শীর্য পর্যায়ের নেতার আঙুলে বরাবরই থাকত পোখরাজ-সহ অন্যান্য আংটি। কৈরানা ভোটের আগে তাতে যোগ হয়েছিল নীলা! অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক মাঝারি মাপের কর্তা বললেন, ‘‘একে হারের ধাক্কা। তার পর আজ শুক্রবার। নেতারা বিশেষ কেউ বাড়ি থেকে বেরোননি। যাঁরা একটু দূর থেকে দিল্লি এসে থাকেন, তাঁরাও চলে গিয়েছেন বাড়ি। কোনও কর্মসূচি নেই। ফলে ফাঁকা দুর্গ সামলাচ্ছি।’’
দুর্গই বটে! অশোক রোডে বিজেপি অফিস তাও খোলামেলা ছিল। দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে আসার পর থেকেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত কড়াকড়ি বেড়ে গিয়েছে। অন্য রাজ্যের পার্টি সদস্যদের ঢুকতে হলে পরিচয়পত্র দাখিল করে তল্লাশির পর অনুমতি মেলে। আর অফিসে যদি খোদ অমিত শাহ উপস্থিত থাকেন, তাহলে তো কথাই নেই। প্রহরা বেড়ে যায় আরও অনেকটাই। বেসরকারি সংস্থার ক্ষুরধার রক্ষকেরা থাকেন অতন্দ্র। আজ দেখা গেল, রাজনৈতিক ফলাফলের মাহাত্ম্য তাঁরাও যেন বুঝে গিয়েছেন! চড়া রোদে ছায়া খুঁজে নিয়ে দিবানিদ্রাও দিতে দেখা গেল কিছু রক্ষীকে। বাধাহীন এবং পরিচয়পত্র ছাড়াই গেট দিয়ে ঢোকার সময় একটা অলস চাহনি এল মাত্র।
তারপর তাঁরাও ডুবে গেলেন রণবীর কপূর আর আলিয়া ভট্টর প্রেম কাহিনিতে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy