Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Tripura

ত্রিপুরায় বিকেল ৪টে পর্যন্ত ৮১ শতাংশ ভোট, এখনও ভোটকেন্দ্রের বাইরে বিশাল লাইন

বিজেপির আশা, আগের থেকেও বেশি আসনে জিতবে তারা। আশাবাদী কংগ্রেস এবং সিপিএমও। পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরাতেও ৬০ আসনে জোট গড়ে লড়েছে দুই দল।

image of Tripura Election

বিকেল ৪টে পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্যে ভোট পড়েছে ৮১ শতাংশেরও বেশি। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
আগরতলা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৩১
Share: Save:

ত্রিপুরায় ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত। কিন্তু বৃহস্পতিবার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও প্রায় প্রতিটি বুথের বাইরেই লম্বা লাইন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে বিকেল চারটে পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৮১.১০ শতাংশ। তবে লাইনে যত ভোটার সন্ধ্যা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে, তাঁদের সকলের ভোট দেওয়ার পর শতাংশের ওই হিসাব অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সংঘর্ষ, ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ, বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যেই শেষ হয়েছে ত্রিপুরার ভোটগ্রহণ। বিকেল ৪টে পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্যে ভোট পড়েছে ৮১ শতাংশেরও বেশি। বিজেপির আশা, আগের থেকেও বেশি আসনে জিতবে তারা। আশাবাদী কংগ্রেস এবং সিপিএমও। পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরাতেও ৬০ আসনে জোট গড়ে লড়েছে দুই দল। প্রথম বার লড়াই করে নিজেদের ছাপ রাখার বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত প্রদ্যোৎমাণিক্য দেববর্মার তিপ্রা মথা। এই প্রথম বার ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছে তৃণমূল। তারা স্পষ্টই জানিয়েছে, হারজিৎ নিয়ে ভাবছে না। ফল যা-ই হোক, ভোটের পরেও মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে। কার আশা পূরণ হবে, জানা যাবে ২ মার্চ। ওই দিনই ভোটের ফল ঘোষণা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছড়িয়েছে। বিজেপির দিকে বার বার আঙুল তুলেছে কংগ্রেস এবং সিপিএম। তাদের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। টুইটারে নির্বাচন কমিশনকে ট্যাগ করে অভিযোগ করেছে, ভোটারদের ভোট দিতে যেতে দিচ্ছে না বিজেপি। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিপ্রা মথা প্রধান প্রদ্যোৎও।

অন্য দিকে, আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার কারণে ত্রিপুরার বিজেপি এবং কংগ্রেসকে নোটিস পাঠিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কংগ্রেস এবং বিজেপির তরফে ভোট চাওয়ার আবেদন করে টুইটের অভিযোগ এনেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও এ সবের মধ্যেই ত্রিপুরায় ভোটদানের হার ছিল যথেষ্ট ভাল। জায়গায় জায়গায় মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে দারুণ উৎসাহ দেখা দিয়েছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছিল ৫১.৪ শতাংশ।

বিজেপি অবশ্য হিংসার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানিয়েছেন, গত বারের থেকেও ভাল ফল হবে এ বার। উত্তর-পূর্বে বিজেপির সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরার পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের বাকি দুই রাজ্য মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে ভাল ফল করবে বিজেপি। ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই দুই রাজ্যে ভোট।

৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। তাদের হারিয়ে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। ২০১৮ সালে ত্রিপুরা ভোটে সিপিএম জিতেছিল ১৬টি আসনে। প্রায় ৩৫ বছর সে রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার পরেও এ বার সিপিএম ৬০টির মধ্যে ৪৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। বাকি ১৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে তাদের জোটসঙ্গী কংগ্রেস। গত ভোটে একটি আসনেও জেতেনি কংগ্রেস। গত ভোটে ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৬টিতে জিতেছে তারা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরেও ত্রিপুরার স্থানীয় দল ইন্ডিজেনাস প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট (আইপিএফটি)-এর সঙ্গে জোটেই সরকার গড়ে বিজেপি। ওই দলের বিধায়ক সংখ্যা আট। ২০২১ সালে জনজাতি এলাকায় অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল ভোটে একটি আসনেও জিততে পারেনি বিজেপির এই জোটসঙ্গী। তাই এ বার বিজেপি তাদের ছেড়েছে পাঁচটি আসন।

তবে আইপিএফটিকে সঙ্গে নিলেও এ বার ত্রিপুরার জনজাতি ভোট বিজেপির ঘরে কতটা ঢুকবে, সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ রাজপরিবারের সদস্য প্রদ্যোতের নতুন দল তিপ্রা মথা। বিজেপি প্রাথমিক ভাবে প্রদ্যোতের দলের সঙ্গে জোট গড়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পাত্তা দেননি দলের প্রধান। তিনি সাফ জানিয়েছেন, আর যাই হোক তুতো ভাই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তিনি নন। সব দলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তা বলে বিজেপিতে যাবেন না। পৃথক তিপ্রাল্যান্ডের দাবিতেও সরব হয়েছেন তিনি। বিজেপি যদিও তাঁকে সিপিএম-কংগ্রেসের ‘বি টিম’ হিসাবে কটাক্ষ করেছে। তাতেও পাত্তা দিতে নারাজ প্রদ্যোৎ। পাল্টা বিজেপিকেই মেঘালয় আর নাগাল্যান্ডে অন্য দলের বি-টিম বলে দাগিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura Election BJP TIPRA Motha TMC CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE