Advertisement
E-Paper

বিহার এসআইআর: কোন কোন জেলা থেকে বেশি নাম বাদ পড়ল? শীর্ষ তিনের মধ্যে দু’টিই বাংলাঘেঁষা, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত!

বিহারের ৩৮টি জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭.৯ কোটি। এসআইআর-এর পরে তা থেকে ৬৫ লক্ষ জনের নাম বাদ গিয়েছে। শতাংশের বিচারে যা ৮.৩১ শতাংশ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৯
Two districts of Bihar Seemanchal among top three in voter deletion after SIR

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সমীক্ষার (এসআইআর) পরে বাদ পড়েছে ৬৫ লক্ষ নাম। পরিসংখ্যান বলছে, এঁদের অধিকাংশই কোনও না কোনও সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দা। বাদ পড়া নামের নিরিখে শীর্ষ তিন জেলার মধ্যে দু’টিই পশ্চিমবঙ্গঘেঁষা এবং সংখ্যালঘু অধ্যুষিত।

বিহারের ৩৮টি জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭.৯ কোটি। এসআইআর-এর পরে তা থেকে ৬৫ লক্ষ জনের নাম বাদ গিয়েছে। শতাংশের বিচারে যা ৮.৩১ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাম বাদ গিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সীমান্তঘেঁষা গোপালগঞ্জ থেকে। এখান থেকে ১৫.১ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকায় এর পরেই রয়েছে পূর্ণিয়া এবং কিশানগঞ্জ। বিহারের চারটি জেলা পশ্চিমবঙ্গ এবং নেপালের সীমান্তবর্তী। এই চার জেলাকে একত্রে সীমাঞ্চল বলা হয়ে থাকে। পূর্ণিয়া, কিশানগঞ্জ ছাড়াও সীমাঞ্চলের মধ্যে পড়ে কাটিহার এবং আরারিয়া। পরিসংখ্যান বলছে, পূর্ণিয়া থেকে ১২.০৮ শতাংশ এবং কিশানগঞ্জ থেকে ১১.৮২ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে এসআইআর-এর পর।

সীমাঞ্চলের বাকি দুই জেলার মধ্যে কাটিহার থেকে ৮.২৭ শতাংশ এবং আরারিয়া থেকে ৭.৫৯ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, সীমাঞ্চলের জেলাগুলিতে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা বেশি। ২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, কিশানগঞ্জে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাস সবচেয়ে বেশি— ৬৭.৮৯ শতাংশ। এ ছাড়া, কাটিহারে ৪৪.৪৭ শতাংশ, আরারিয়ায় ৪২.৯৫ শতাংশ এবং পূর্ণিয়ায় ৩৮.৪৬ শতাংশ মুসলিম ভোটার আছেন। বিহারের বাকি আর দু’টি জেলায় ভোটারদের নাম বাদ পড়ার হার ১০ শতাংশের বেশি— নেপাল সীমান্তবর্তী মধুবনী (১০.৪৪ শতাংশ) এবং ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী ভাগলপুর (১০.১৯ শতাংশ)। সীমাঞ্চল বাদ দিলে বিহারে মোট মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ১৬.৮৭ শতাংশ।

বিহারের বিজেপি নেতা তথা উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধরি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, এসআইআর পর্বে রাজ্য জুড়েই আবাসিক শংসাপত্রের জন্য আবেদনের ধুম লেগেছে। নির্বাচন কমিশন এসআইআর-এর জন্য এই শংসাপত্র আবশ্যিকের তালিকায় রেখেছিল। সীমাঞ্চল থেকে এর আবেদনের সংখ্যা তুলনায় অনেক বেশি। সম্রাটের দাবি, ‘‘এর থেকেই প্রমাণ হয়, আবেদনকারীদের অনেকেই অন্য দেশ থেকে এখানে চলে এসেছেন। তাঁরা পরিযায়ী।’’ তবে আরজেডি বিধায়ক শাহানওয়াজ় আলম এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সীমাঞ্চল বিহারের পিছিয়ে পড়া অংশের মধ্যে অন্যতম। এখানে অনেকের কাছেই তাই আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড ছাড়া আর তেমন কোনও নথি নেই। নির্বাচন কমিশন এসআইআর-এর জন্য ১১টি আবশ্যিক নথির তালিকায় দু’টির কোনওটিকেই রাখেনি। ফলে তাঁদের এখন আবাসিক শংসাপত্রের জন্য নতুন করে আবেদন করতে হচ্ছে।

সীমাঞ্চলের ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কী কী কারণ দেখানো হয়েছে? পরিসংখ্যান বলছে, ৩৯.২৯ শতাংশ নাম বাদ পড়েছে ‘স্থায়ী ভাবে স্থানান্তরিত’ হওয়ার জন্য। ৩৩.৫৭ শতাংশ মৃত ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এ ছাড়া, ১৮.২৫ শতাংশ ভোটারের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আগে থেকে নাম নথিভুক্ত থাকা এবং নকল বা অতিরিক্ত নামের জন্য আরও ৮.৮৯ শতাংশ নাম বাদ গিয়েছে। খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে যে সমস্ত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, বিহারের অন্যান্য অংশের তুলনায় তার হার সীমাঞ্চলে বেশি। ‘অনুপস্থিত’ ভোটারের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি পূর্ণিয়া এবং কিশানগঞ্জে।

সমগ্র বিহারেই বাদ পড়া ভোটারের তালিকায় পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের সংখ্যা বেশি। সীমাঞ্চলেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চার জেলা থেকে মোট ৫৬.৭১ শতাংশ মহিলা ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

গত তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে বিহারের সীমাঞ্চলে বিজেপি— নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের আসন কমেছে। এই এলাকায় মোট বিধানসভা আসনের সংখ্যা ২৪। ২০১০ সালে তার মধ্যে ১৭টি আসন এনডিএ পেয়েছিল। ২০১৫ সালে জেডিইউ, আরজেডি এবং কংগ্রেস জোট করে লড়েছিল বিহারে। সে বার কংগ্রেস একাই সীমাঞ্চল থেকে আটটি আসন পায়। এলজেপি-র সঙ্গে জোট করে সে বার বিজেপি জিতেছিল মাত্র ছ’টি আসনে। ২০২০ সালের নির্বাচনে সীমাঞ্চলে মিমের আধিপত্য বেড়েছিল। তারা পাঁচটি আসন জিতে নিয়েছিল এই এলাকায়। পরে অবশ্য পাঁচ জনের মধ্যে চার জন বিধায়কই আরজেডি-তে যোগ দেয়। জেডিইউ-এর সঙ্গে জোট করে ২০২০ সালে বিজেপি সীমাঞ্চলের আটটি আসন জেতে। কংগ্রেস জেতে পাঁচটিতে।

SIR Voter List Controversy Voter List rectification Voter List Correction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy