Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

‘নীল তিমি’র হাতছানি থেকে উদ্ধার ২ কিশোর

অনলাইন সুইসাইড গেম ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়ে গত সপ্তাহেই প্রাণ গিয়েছিল মুম্বই শহরতলির এক কিশোরের। এ দেশে এই গেমের প্রথম শিকার ছিল ১৪ বছরের সেই কিশোর, মনপ্রীত সিংহ।

মারণ-খেলা: ‘ব্লু হোয়েল’ গেমে এ ভাবেই নিজের হাতে রক্ত দিয়ে আঁকতে হয় তিমির ছবি।

মারণ-খেলা: ‘ব্লু হোয়েল’ গেমে এ ভাবেই নিজের হাতে রক্ত দিয়ে আঁকতে হয় তিমির ছবি।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

‘নীল তিমি’-র নেশা পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। অনলাইন সুইসাইড গেম ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়ে গত সপ্তাহেই প্রাণ গিয়েছিল মুম্বই শহরতলির এক কিশোরের। এ দেশে এই গেমের প্রথম শিকার ছিল ১৪ বছরের সেই কিশোর, মনপ্রীত সিংহ। নিজেরই বাড়ির ছ’তলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল সে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় সেই সংখ্যাটাই আরও বাড়তে পারত। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও মতে প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে দুই কিশোরের।

একটি ঘটনা মহারাষ্ট্রেরই শোলাপুরের। অন্যটি মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের। পুলিশ জানিয়েছে, দুই কিশোরই বেশ কয়েক দিন ধরে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলছিল। একেবারে শেষ ধাপে আটকানো গিয়েছে তাদের। দু’জনের বাড়ির লোকই পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই কিশোররা যে গোপনে এমন এক মারাত্মক অনলাইন গেম খেলছিল, তা তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।

শোলাপুরের এক ব্যবসায়ীর চোদ্দো বছরের ছেলে গত কাল হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। বাড়ির লোকেরা পুলিশে খবর দিলে খোঁজ শুরু হয়। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে গত কয়েক দিন ধরে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলছিল ওই কিশোর। গেমের হ্যান্ডলাররা তাকে শেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে পুণে শহরের কোনও এক জায়গা বেছে দিয়েছিল। শোলাপুর থেকে পুণে যাওয়ার প্রতিটি বাসে এর পর তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। এমনই একটি বাস থেকে পাওয়ায় যায় কিশোরটিকে। এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, নবম শ্রেণির ছাত্রটি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিল। ধরা পড়ার পরে গেম নিয়ে অবশ্য একটি শব্দও খরচ করেনি সে।

দ্বিতীয় ঘটনাটি ইনদওরের। কাল সেখানকার রাজেন্দ্রনগরের একটি স্কুলের চার তলার জানলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করছিল এক তেরো বছরের কিশোর। তার বন্ধুরা তাকে আটকাতে চায়। বিষয়টি এক শিক্ষকের নজরে আসায় তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেন। শেষমেশ ওই স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক এসে ছেলেটির প্রাণ বাঁচান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রের বন্ধুরা জানত যে সে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলছে। কিন্তু কোন ধাপ পর্যন্ত পৌঁছেছিল, তা তারা জানত না। আত্মহত্যার ‘টাস্ক’ ওই কিশোর স্কুলের ডায়েরিতেও লিখে রেখেছিল। প্রাণ বাঁচানোয় স্কুল শিক্ষকের উপর ক্ষুব্ধও হয়েছে ওই কিশোর।

বাবা-মায়েদের উদ্দেশে মনোবিদেরা বলছেন, ‘‘মোবাইল বা কম্পিউটারে বাচ্চারা কী খেলছে তা নজর রাখুন। অস্বাভাবিকতা কিছু দেখলে ওদের সঙ্গে কথা বলুন।’’ ‘ব্লু হোয়েল’ বানানোই হয়েছে কমবয়সি ছেলে-মেয়েদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য। ৫০ ধাপের এই খেলার শেষ ধাপে আসে আত্মহত্যার চ্যালেঞ্জ। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ১৩০ জনেরও বেশি কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়ে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই ধরনের সুইসাইড গেম কি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা যায় না? মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, এই খেলা বন্ধ করতে কেন্দ্রকে চিঠি লিখবেন তিনি। একই বক্তব্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং কেরলের পিনারাই বিজয়নের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blue Whale Online Challenge Online Game
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE