Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উন্নাও-কাণ্ডের নিন্দা কুভাষায়, নিন্দিত উদয়ন

কয়েক দিন আগে উন্নাওয়ের ধর্ষিতার গাড়ি ট্রাকে পিষে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই প্রসঙ্গেই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে উদয়ন একটি পোস্ট করেন।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়াই তিনি বরাবরই উচ্চকণ্ঠ। তা সে বিরোধীদের খোঁচা দিতেই হোক কিংবা ক্রিকেটীয় বিষয়ে বিশ্লেষণ। সোশ্যাল মিডিয়াতেই তাঁর কলমের খোঁচা খেয়েছেন রাজ্যপালও। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন বিজেপি নেতারা। এ ক্ষেত্রে উপলক্ষ উন্নাওয়ের ধর্ষণ কাণ্ড। তিনি হলেন কোচবিহারের দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ।

কয়েক দিন আগে উন্নাওয়ের ধর্ষিতার গাড়ি ট্রাকে পিষে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই প্রসঙ্গেই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে উদয়ন একটি পোস্ট করেন। তার ভাষা যে অত্যন্ত কদর্য, তা ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কমল গুহের পুত্রের ওই বক্তব্য দেখে এক জন মন্তব্য করেন, ‘ঘটনাটি নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। কিন্তু একটু ভাষা সংযত হলে ভাল হয়...।’ অন্য এক জন লেখেন, ‘আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারছি না..। এখনও ভাবছি, পোস্টটা কি আপনি করেছেন...। নাকি অন্য কেউ...।’

রাতে পোস্টটি ফেসবুকে থাকলেও পরে তা সরিয়ে নেন উদয়নবাবু। তবে কেন তিনি এমন মন্তব্য করলেন, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর মতে, ‘‘বিষয়টি যখন ডিলিট করা হয়েছে, আর তা নিয়ে কোনও বক্তব্য নয়।’’

উদয়নবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হিংসার প্রতিবাদে যদি এমন হিংসাত্মক ভাষা ব্যবহার করা হয়, তা হলে নির্যাতনকারী এবং প্রতিবাদকারী একই দোষে দোষী। প্রতিবাদকারীও নারীদেহ নিয়ে যে-মন্তব্য করলেন, তা-ও মেয়েটির প্রতি যৌন অত্যাচারই।’’ বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যিনি এই ধরনের মন্তব্য করেছেন, তিনি মানসিক রোগগ্রস্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত, তাঁকে এখনই বরখাস্ত করা।’’

লোকসভা নির্বাচনে দিনহাটায় বিজেপির কাছে ১৫,৫৩৯ ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সেই বিষয়েও ফেসবুকে ‘অনুতপ্ত’ হওয়ার কথা লিখেছিলেন উদয়নবাবু। কিন্তু উন্নাওয়ের ঘটনা নিয়ে তাঁর বক্তব্য সভ্যতার সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলেই মনে করছেন ‘নেটিজেনরা’।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মুখে আগল দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বক্তব্যে রাশ টানার কথা বলছেন প্রশান্ত কিশোরও। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীরা সেই সব নির্দেশ বা পরামর্শে কতটা কান দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। উন্নাও কাণ্ড নিয়ে দিনহাটার দলীয় বিধায়ক উদয়নবাবুর বক্তব্যের পরে সেই প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE