Advertisement
E-Paper

থমথমে মণিপুর, কুকিদের ডাকা বন্‌ধে আপাতত শান্ত কাংপোকপি! মোতায়েন বাড়তি বাহিনী

শনিবার কাংপোকপি জেলার বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কুকি জনগোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীরা। জানা গিয়েছে, ওই সংঘর্ষে এক জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে ৪০।

Uneasy calm in Manipur’s Kangpokpi district, additional security forces deployed

নিরাপত্তাবাহিনীর টহলদারি কাংপোকপি জেলায়। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ ১২:২৩
Share
Save

ফের হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ মণিপুরের কাংপোকপি জেলা। দিকে দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গুলির খোল। পোড়া গাড়ি, বাড়ি। কোথাও কোথাও রাস্তার উপর আবার রক্তের দাগ! কুকি জনগোষ্ঠীর ডাকা বন্‌ধে রবিবার সকাল থেকেই থমথমে কাংপোকপি। শুধু ওই জেলা নয়, মণিপুরের বিভিন্ন এলাকার ছবিও প্রায় একই। সকালের দিকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির সৃষ্টি হলেও আপাতত শান্ত। উত্তেজনা যাতে না ছড়াতে পারে, সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তায় রুটমার্চ করছে তারা।

শনিবার কাংপোকপি জেলার বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন কুকি জনগোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীরা। জানা গিয়েছে, ওই সংঘর্ষে এক জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত কমপক্ষে ৪০। তাঁদের মধ্যে মহিলা, শিশুও রয়েছেন। শনিবার রাত পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে কুকিরা রবিবার বন্‌ধের ডাক দেয়।

উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি রয়েছে। মণিপুরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা। গত ২ মার্চ ভল্লা এবং অন্য আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুরের পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন তিনি। বৈঠকের পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের সব রাস্তা যেন সচল থাকে। রাজ্যের রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষ যেন বিনা বাধায় চলাচল করতে পারেন। কিন্তু শনিবার দেখা যায় কুকি জনগোষ্ঠীর কিছু লোক পথ অবরোধ করেন। সেই থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত।

অভিযোগ, অবরোধ তুলতে পুলিশ বলপ্রয়োগ করে। ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। কাংপোকপি জেলার কুকি জনগোষ্ঠীর অবরোধকারীদের লাঠিচার্জ করে হটায় নিরাপত্তাবাহিনী। তাতে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী আহত হন। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা বাস, গাড়ি লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকেন। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি বাসে। সেই সংঘর্ষের সময়ই নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে এক তরুণের মৃত্যু হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়, সংঘর্ষে তাদেরও ২৭ জন কর্মী আহত। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শনিবার রাতেই কুকি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। নবগঠিত কুকি-জো কাউন্সিল (কেজ়েডসি) এক বিবৃতিতে জানায়, ওই অঞ্চলে শান্তি না ফেরা পর্যন্ত, এবং কুকিদের রাজনৈতিক দাবিদাওয়াগুলি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের ‘অবাধ চলাচল’ উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করবেন তাঁরা। সেই মতো রবিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা পথে নামেন। সকালের দিকে মণিপুরের কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়ালেও মোটের উপর শান্ত। সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাড়তি বাহিনী মোতোয়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তাই তারা বিভিন্ন দিকে টহল দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি এবং মেইতেই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মণিপুর। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে অশান্তির আবহে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছিল। কোনও কোনও রাস্তায় সরকারি পরিবহণ প্রায় ২২ মাস ধরে বন্ধ থেকেছে। শনিবার থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু কুকি অধ্যুষিত এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

Manipur Protest Manipur Violence Kuki Militants

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}