Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
National News

বাজেটে চাপল এক্সাইজ ডিউটি-সেস, লিটারপিছু ২ টাকা দামি পেট্রল-ডিজেল

নির্মলার প্রস্তাব: ‘‘পেট্রল-ডিজেলে লিটার প্রতি এক টাকা স্পেশাল অ্যাডিশনাল এক্সাইজ ডিউটি এবং এক টাকা রোড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেস বসানোর প্রস্তাব দিচ্ছি।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ১৯:০৩
Share: Save:

মূল্যবৃদ্ধির চাপে নাভিশ্বাস আমজনতার। তার মধ্যেই বাজেটে তেলের দাম এক ধাক্কায় লিটার পিছু দু’টাকা বাড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এক টাকা করে এক্সাইজ ডিউটি এবং একই হারে সেস বসানোয় লিটার প্রতি দু’টাকা দামি হয়ে গেল পেট্রল ডিজেলের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমছে। সেই কারণেই এক্সাইজ ডিউটি এবং সেস পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ হয়েছে বলে মত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। কিন্তু তেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব সব ক্ষেত্রে পড়ে। তাই বাজেটের এই সিদ্ধান্তে মূল্যবৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী বলেই ধরে নিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।

শুক্রবার লোকসভায় বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই বাজেটেই তাঁর প্রস্তাব: ‘‘পেট্রল-ডিজেলে লিটার প্রতি এক টাকা স্পেশাল অ্যাডিশনাল এক্সাইজ ডিউটি এবং এক টাকা রোড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেস বসানোর প্রস্তাব দিচ্ছি।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম যে উচ্চতায় উঠেছিল, সেখান থেকে অনেকটাই নেমে এসেছে। এই পরিস্থিতিই পেট্রল-ডিজেলের এক্সাইজ ডিউটি এবং সেস বাড়ানোর সুযোগ পাওয়া গিয়েছে।’’ অর্থাৎ লিটারে দু’টাকা করে দাম বেড়ে গেল পেট্রল ও ডিজেলের।

২০১৯ সালে জ্বালানি তেলের দাম খুব বেশি বাড়েনি। ১ জানুয়ারি থেকে পেট্রলের দাম ১ টাকা ৬৭ পয়সা এবং ডিজেলের দাম ১ টাকা ৮৬ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার অর্থ সরকারের হিসেবে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। আবার ভারতীয় রুপির তুলনায় ডলারের দামও খুব বেশি বাড়েনি। কাঁচা তেল কিনতে হয় ডলার দিয়ে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই দামবৃদ্ধির সুদুরপ্রসারী প্রভাব উপেক্ষা করেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখিয়েছে মোদী সরকার।

আরও পডু়ন: বাজেটের পর কিসের দাম কমছে, বাড়ছে কী কী

আরও পডু়ন: আয়করে তেমন কিছুই জুটল না মধ্যবিত্তের, শুধু ছাড়ের সীমা বাড়ল গৃহঋণের সুদে

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এ বছর ব্যারেলপিছু প্রায় ৯ ডলার বেড়েছে। জানুয়ারিতে এক ব্যারেলের দাম ছিল ৫৩.৮ ডলার। বর্তমানে সেই দাম ৬৩ ডলার। যদিও এপ্রিলে এই মূল্য পৌঁছে গিয়েছিল ৭৫ টাকায়। কিন্তু সেখান থেকে আরও ১২ ডলার নেমে আসাকেই অর্থমন্ত্রী বলছেন স্বস্তি। দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও জানুয়ারি থেকে হিসেব ধরলে কাঁচা তেলের দাম বাড়তির দিকেই। কিন্তু ব্যারেল প্রতি ১২ ডলার কমে যাওয়া এবং আর্থিক সমীক্ষায় আরও কমার পূর্বাভাসকেই হাতিয়ার করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।

নির্মলা সীতারামন বোঝাতে চেয়েছেন, তেলের দামবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, এই দাবি এক্কেবারেই ঠিক নয়। কারণ, তেলের দাম বাড়লে কোনও ক্ষেত্রই তার প্রভাব মুক্ত হতে পারে না। গণ পরিবহণ থেকে ব্যক্তিগত যানের উপর যেখানে প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে, তেমনই পরোক্ষ প্রভাব পড়ে শিল্প কারখানা থেকে ব্যাঙ্কিং, পরিষেবা থেকে পরিকাঠামো— সর্বত্র। আর তার যোগফল সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি এবং মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া বা প্রকৃত আয় কমে যাওয়া।

আরও পডু়ন: ‘গ্রামই ভারতের আত্মা’ বাজেটের লক্ষ্য ‘গাঁও গরিব কিসান’, বললেন নির্মলা

রাজকোষের হিসেবে অবশ্য নির্মলার এই টনিক কাজে আসতে পারে। বাজেটে আর্থিক ঘাটতি ৩.৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৩ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির আয়ের অন্যতম বড় উৎস তেলের উপর চাপানো বিভিন্ন ধরনের সেস, কর এবং শুল্ক। পেট্রল-ডিজেলের দামের প্রায় এক তৃতীয়াংশই এই সব শুল্ক। ফলে জ্বালানি তেলের এই মূল্যবৃদ্ধিতে রাজকোষের ঘাটতি অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে, মত অর্থনীতিবিদদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Budget Nirmala Sitharaman Petrol Diesel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE