গীতা গোপীনাথ।
ভারতীয় অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা গেলেও তার সুফল বণ্টন যে অসাম্যে ভরপুর, তা মেনে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষই। এমনকি, জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরও। বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের এই সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ। বুধবার এক সাক্ষাৎকারে তাঁর আশা, অতিমারির জেরে আর্থিক ভাবে ধাক্কা খাওয়া মানুষদের জন্য মার্চের পরেও নিখরচায় রেশনের ব্যবস্থা চালু রাখবে কেন্দ্র। বাড়তি গুরুত্ব দেবে গ্রামীণ কর্মসংস্থানে।
সম্প্রতি কেন্দ্রের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু জানিয়েছেন, ভারতের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র উন্নতি করলেও অর্ধেক মানুষ এখনও রয়েছেন মন্দার খাদে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের মতে, কোনও কোনও ক্ষেত্রে রুপোলি রেখা দেখা গেলেও সমাজের নীচের দিকের বিরাট অংশ অন্ধকারে তলিয়ে। গীতারও বক্তব্য কিছুটা তেমনই। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঠিকই, যে জায়গায় থাকা উচিত ছিল সেই তুলনায় পিছিয়ে আছে। ভবিষ্যতে বিক্রিবাটা এবং বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’’
এরই মধ্যে মঙ্গলবার আইএমএফ জানিয়েছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া ফের বিঘ্নিত হচ্ছে। চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৯.৫% থেকে কমিয়ে ৯% করেছে তারা। এর আগে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, ফিচ, মুডিজ়, এসঅ্যান্ডপি, ইক্রা-সহ আরও অনেকে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। এই অবস্থায় মাথার উপরে বিপুল প্রত্যাশার চাপ নিয়েই দ্বিতীয় মোদী সরকারের চতুর্থ বাজেট পেশ করতে চলেছেন নির্মলা।
শিল্প ও আর্থিক মহলের মতে, অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরানোর লক্ষ্যে সরকারি খরচে হাত গোটানো এখনই উচিত হবে না কেন্দ্রের। গীতারও পরামর্শ, পরিকাঠামো খাতে খরচ চালিয়ে যাক কেন্দ্র। সেই অর্থ সংস্থানের জন্য প্রয়োজনে সরকারি সম্পদকে কাজে লাগিয়ে রাজকোষে বেশি করে টাকা আনার প্রক্রিয়া চলুক।
পাশাপাশি, আর্থিক অসাম্যের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান অর্থনীতিবিদ। তাঁর বক্তব্য, বাজেটে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ থাকা উচিত। যথেষ্ট বরাদ্দ রাখা উচিত গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা প্রকল্পে। সেই সঙ্গে নিখরচায় রেশন বণ্টনের প্রকল্প চালানো হোক আগামী অর্থবর্ষেও। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার অধীনে আপাতত আগামী মার্চ পর্যন্ত ওই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং শিক্ষা খাতেও বরাদ্দ বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়েছেন গীতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy