(বাঁ দিকে) ধৃত আফতাব আমিন পুণাওয়ালা এবং শ্রদ্ধা ওয়ালকার। — ফাইল চিত্র।
নিরাপত্তার কারণে তিহাড় জেলের একটি নির্জন কক্ষে (সলিটারি সেল) রাখা হয়েছে দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে খুনের ঘটনায় ধৃত আফতাব আমিন পুণাওয়ালাকে। দিনে মাত্র এক ঘণ্টার জন্য তাঁর বাইরে আসার অনুমতি রয়েছে। শুক্রবার দিল্লি আদালত সেই সময় বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছে। তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে আদালত বলেছে, আফতাবকে দিনে আট ঘণ্টার জন্য নির্জন কক্ষের বাইরে থাকার অনুমতি দিতে হবে।
আফতাবের আইনজীবীর অভিযোগ, অন্যান্য বন্দি যাঁদের জেলে নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে, তাঁদের দিনে আট ঘণ্টা বাইরে থাকার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু তাঁর মক্কেলকে সকাল এবং সন্ধ্যা মিলিয়ে মাত্র এক ঘণ্টা বাইরে যেতে দেওয়া হয়। কেন আফতাবের ক্ষেত্রে এই দ্বিচারিতা করা হবে, শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি সুরেশকুমার কাইতের ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী।
তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষের তরফে শুক্রবার আদালতে জানানো হয়, অভিযুক্তের প্রাণনাশের হুমকি রয়েছে। সেই হুমকির কারণেই অন্য বন্দিদের থেকে আলাদা রাখা হয়েছে তাঁকে। জেল কর্তৃপক্ষ আরও বলেন, ‘‘অতীতে আফতাবকে তদন্তের স্বার্থে রোহিণীতে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (এফএসএল) নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। তার পর থেকে জেলের মধ্যেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’’
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি সুরেশ বলেন, ‘‘আবেদনকারীর অনুরোধ মেনে আমরা জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিচ্ছি যে অন্যান্য বন্দিদের মতোই আফতাবকেও আট ঘণ্টা জেলের নির্জন কক্ষের বাইরে থাকতে দিতে হবে।’’
দিল্লির বাসিন্দা শ্রদ্ধাকে খুন করার অভিযোগ ওঠে আফতাবের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল শ্রদ্ধা-আফতাবের। তার পর তাঁরা একত্রবাস করতেন। ২০২২ সালের ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব। পুলিশের চার্জশিটেও সে কথা বলা হয়েছে। আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নিয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে নতুন ফ্রিজ়ও কিনে আনেন তিনি। এর পর ১৮ দিন ধরে মেহরৌলির জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেফতার করে। জানুয়ারি মাসে ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যায়, উদ্ধার হওয়া দেহাংশগুলি শ্রদ্ধারই। জানুয়ারি মাসেই আফতাবের বিরুদ্ধে ৬,০০০ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়। বর্তমানে আফতাব তিহাড় জেলেই বন্দি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy