কুলদীপ সেঙ্গার।
উন্নাওয়ে দু’বছর আগে ধর্ষিতার বাবাকে মারধরে দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কূলদীপ সেঙ্গার এবং তার ভাই। কিন্তু এ ঘটনায় দোষীদের খুনের উদ্দেশ্য ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন দিল্লি আদালতের বিচারক। ২০১৭য় ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সেঙ্গার এখন জেলে রয়েছে। নির্যাতিতার বাবাকে মারধর ও অনিচ্ছাকৃত মত্যু ঘটানোর দায়েও দোষী সাব্যস্ত করা হল তাঁকে।
২০১৮-র এপ্রিলের গোড়ায় বিজেপির তৎকালীন বিধায়ক সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে নির্যাতিতা যখন অনশনের হুমকি দেন, বিষয়টি তখন প্রকাশ্যে আসে। তার পরের দিনই নির্যাতিতার বাবাকে প্রচণ্ড মারধরের অভিযোগ ওঠে সেঙ্গার ও তাঁর ভাই অতুলের বিরুদ্ধে। তাঁকে থানায় নিয়ে যায় অতুল ও তার সঙ্গীরা। পুলিশ নির্যাতিতার বাবার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দেয়। পরে পুলিশি হেফাজতে মারা যান নির্যাতিতার বাবা। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রচণ্ড মারধরে পেটের মধ্যে অন্ত্র ফেটে গিয়ে রক্ত বিষিয়ে মারা গিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরাসরি পরিচালিত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই অবশ্য রিপোর্টে এই মারধরের ঘটনার সঙ্গে ধর্ষণের অভিযোগের কোনও যোগাযোগ দেখায়নি। নিহতের কন্যা আগের দিন যে অভিযোগ
তুলেছেন, তা নিয়েও রিপোর্ট চুপ। সিবিআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে— ২০১৮-র এপ্রিলের ৩ তারিখে নির্যাতিতার বাবা উন্নাও থেকে মাকি গ্রামে আসার জন্য প্রবল পরাক্রমশালী বিজেপি বিধায়কের গাড়িতে লিফ্ট চান। বিধায়ক তাতে রাজি না-হওয়ায় তাঁর উদ্দেশে খারাপ কথা বলতে শুরু করেন তিনি। যে সেঙ্গারের প্রতাপে এলাকা তঠস্থ, তাঁকে আক্রমণের হুমকিও দেন! এতে রেগে গিয়ে বিধায়কের ভাই অতুল দলবল নিয়ে তাঁকে বেদম মারধর করে। তার পরে পুলিশে দেয়। পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণার কথা পুলিশকে বলা সত্ত্বেও মারে জখম ওই ব্যক্তিকে থানার লক আপে ফেলে রাখে পুলিশ। ৯ অগস্ট সেখানেই তিনি মারা যান।
জেলা জজ ধর্মেশ শর্মা এই মামলাকে তাঁর জীবনের সব চেয়ে কঠিন মামলা বলে বর্ণনা করে বলেন, ‘‘প্রচণ্ড মারধরেই ওই ব্যক্তি মারা গেলেও তাঁকে মেরে ফেলাটা উদ্দেশ্য ছিল না।’’ সিবিআই খুব ভাল তদন্ত করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারক। কর্তব্যে গাফিলতির জন্য তিন জন পুলিশকেও দোষী সাব্যস্ত করেছেন তিনি।
নির্যাতিতাকে ধর্ষণের ঘটনায় সেঙ্গার জেলে থাকাকালীন গত বছর জুলাইয়ে নির্যাতিতার গাড়িতে রহস্যজনক ভাবে
ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। নির্যাতিতা প্রাণে বাঁচলেও মারা যান তাঁর আইনজীবী ও এক আত্মীয়া। নির্যাতিতাকে হত্যার জন্য পরিকল্পিত ভাবে এই ‘দুর্ঘটনা’ ঘটানো হয়েছে, এমন অভিযোগেও মামলা দাযের হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে উন্নাও ধর্ষণ সংক্রান্ত সব মামলা উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতেও সরানো হয়। তার পরে এই রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy