হাত, পা এবং পেটে হিন্দিতে লেখা সুইসাইড নোট। এ রকম অবস্থাতেই শ্বশুরবাড়ি থেকে এক বধূর দেহ উদ্ধার হল উত্তরপ্রদেশের বাগপতে। ঘটনাটি মঙ্গলবারের। মৃতার নাম মনীষা। বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আত্মহত্যার জন্য স্বামী কুন্দন এবং শ্বশুরবাড়িকে দায়ী করে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন মনীষা। পুলিশ সূত্রে খবর, মনীষা হাতে, পায়ে এবং পেটে পেন দিয়ে বেশ কিছু কথা লিখে গিয়েছেন। সেখানে মূলত শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পণের জন্য অত্যাচার, মানসিক নির্যাতন এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন। কী ভাবে তাঁকে দিনের পর দিন গঞ্জনা এবং লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে, সে কথাও উল্লেখ করে গিয়েছেন।
স্বামী কুন্দন তাঁকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। প্রতি দিন অশান্তি লেগে থাকত। শ্বশুর-শাশুড়ি নানা ভাবে হেনস্থা করতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, চিঠির প্রথমেই মনীষা লিখেছেন, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কুন্দন এবং ওর পরিবার দায়ী।’’ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়োও করেন মনীষা। পুলিশ সেই ভিডিয়ো ক্লিপটি পরীক্ষা করে দেখছে। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়োতে মনীষা কাঁদতে কাঁদতে তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং দেওরের বিরুদ্ধে পণের জন্য ক্রমাগত হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। মনীষা ওই ভিডিয়োতে অভিযোগ তুলেছেন, গাড়ি এবং নগদ টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রতি দিন হেনস্থা করেন। বিয়েতে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। পরে একটি মোটরবাইক দেওয়া হয় কুন্দনকে। তার পরেও তাঁকে মারধর করতেন স্বামী এবং দেওর। এমনকি তাঁকে জোর করে গর্ভপাতও করানো হয়। পণের দাবি না মানায় তাঁকে বিদ্যুতস্পৃষ্ট করে হত্যা করারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৩ সালে নয়ডার বাসিন্দা কুন্দনের সঙ্গে বিয়ে হয় মনীষার। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তাঁর উপর পণের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। ক্রমাগত অত্যাচারের মুখে পড়ে ২০২৪-এর জুলাইয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন মনীষা। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের আলোচনাও চলছিল। কিন্তু মনীষা রাজি হননি। তিনি দাবি করেন, বিয়েতে পণ হিসাবে দেওয়া জিনিস যত ক্ষণ না ফেরত দেওয়া হবে, তত ক্ষণ তিনি ডিভোর্সের নথিতে সই করবেন না। তার পরই শ্বশুরবাড়িতে দেহ উদ্ধার হয় মনীষার।