দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় দিটওয়া-র ল্যান্ডফল হবে না। অর্থাৎ, তা স্থলভাগে কোথাও আছড়়ে পড়বে না। তামিলনাড়ু-পুদুচেরীর উপকূল ঘেঁষে বেরিয়ে যাবে। ওই অংশের সমুদ্রে গত দু’দিন ধরে ঝড়ের তাণ্ডব চলছে। ঘূর্ণিঝড় যত এগোচ্ছে, তত তার শক্তি বাড়ছে। বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।
মৌসম ভবন এর আগে জানিয়ছিল, রবিবার সকালের মধ্যে তামিলনাড়ু-পুদুচেরী-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে দিটওয়া। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আরও কাছে এগিয়ে আসার পর তার গতিবিধি নতুন করে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সকালে মৌসম ভবন নতুন বিবৃতিতে জানিয়েছে, দিটওয়া স্থলভাগে প্রবেশ করবে না। তা স্থলভাগের খুব কাছ দিয়ে সমুদ্র ধরেই এগিয়ে যাবে। এই মুহূর্তে তার অবস্থান দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে কারইকাল থেকে ৯০ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর পূর্ব, বেদারান্নিয়াম থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব, পুদুচেরী থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, শ্রীলঙ্কার জাফনা থেকে ১৭০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর পূর্ব এবং চেন্নাই থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব।
আরও পড়ুন:
গত ছ’ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় এগিয়েছে সাত কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর তামিলনাড়ু-পুদুচেরীর উপকূলের সমান্তরালে উত্তর দিকে এগোবে। রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলের সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের দূরত্ব থাকবে সবচেয়ে কম। তা স্থলভাগের সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৭০ কিলোমিটার কাছে আসতে পারে।
দিটওয়ার প্রভাবে সমুদ্রে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। মৎস্যজীবীদের জন্য দু’দিন আগে থেকেই জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। মৌসম ভবনের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূলে। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছোতে পারে ৯০ কিলোমিটারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পরিবর্তনের পর ঝড়ের গতিতেও তারতম্য ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার উপকূলের কাছে প্রবল তাণ্ডব চালিয়েছে দিটওয়া। সেখানে মৃতের সংখ্যা শতাধিক। তার পর তা ক্রমে উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে ভারতের উপকূলের কাছাকাছি এসেছে। এর জন্য তামিলনাড়ু, পুদুচেরী এবং অন্ধ্রপ্রদেশে একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করেছে সরকার। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তামিলনাড়ুর চার জেলায় জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত (লাল) সতর্কতা। স্কুল, কলেজ বন্ধ। এমনকি, ওই অংশে বিমান চলাচলেও ব্যাঘাত ঘটছে ঝড়ের কারণে।
পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব আপাতত পড়ছে না। রাজ্যের সর্বত্র আবহাওয়া শুকনো। কলকাতায় রবিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক। শনিবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি কম। আগামী দু’দিন উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রায় খুব একটা হেরফের হবে না বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তার পর আবার দুই থেকে তিন ডিগ্রি পারদ নামতে পারে।