Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Sonia Gandhi

নেতৃত্ব বদলের আর্জি, নির্বাচন চেয়ে সনিয়াকে চিঠি ১০০ কংগ্রেস নেতার

কংগ্রেসের ১৩৫ বছরের যাত্রাপথে এত দিন নেহরু-গাঁধী পরিবারের সদস্যরাই সাধারণত দলের নেতৃত্বে থেকেছেন।

নেতৃত্ব বদলের আর্জি নিয়ে সনিয়াকে চিঠি কংগ্রেস নেতাদের। —ফাইল চিত্র।

নেতৃত্ব বদলের আর্জি নিয়ে সনিয়াকে চিঠি কংগ্রেস নেতাদের। —ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ১৬:১১
Share: Save:

দীর্ঘ টানাপড়েনের পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে রাজস্থানে। তার পর থেকেই দলের শীর্ষে স্থায়ী নেতৃত্বের দাবি উঠছিল কংগ্রেসে। তা নিয়ে এ বার সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখলেন প্রায় ১০০ জন কংগ্রেস নেতা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন সাংসদও রয়েছেন। অবিলম্বে নেতৃত্ব বদল এবং কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে (সিডব্লিউসি) স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

রাজস্থানে সচিন পাইলট বিদ্রোহ ঘোষণার পরই দলের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন বহিষ্কৃত কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা। নেতৃত্ব বদলের সময় এসেছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তার জেরে গত মাসে তাঁকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার সনিয়াকে লেখা চিঠির কথা তিনিই সামনে এনেছেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘দলের অন্দরে যা পরিস্থিতি তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে সাংসদ-সহ দলের প্রায় ১০০ নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখেছেন। নেতৃত্ব বদল এবং সিডব্লিউসি-তে স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।’’

কংগ্রেসের অন্য নেতারা এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর মধ্যস্থতায় সচিন পাইলট রাজস্থানে ফিরে যাওয়ার পর থেকেই দলের অন্দরে নতুন করে রাহুলকে দায়িত্বে ফিরিয়ে আনার দাবি উঠছিল। তার মধ্যেই এ দিন ওই চিঠির কথা সামনে এল।

সঞ্জয় ঝা-র টুইট।

আরও পড়ুন: ‘পিএম কেয়ার্স’ এর তথ্য দিতে অস্বীকার, আরটিআই ফেরাল প্রধানমন্ত্রীর দফতর​

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি হিসেবে দলের হাল ধরেন সনিয়া গাঁধী। ঠিক ছিল, নতুন সভাপতি দায়িত্ব হাতে না নেওয়া পর্যন্ত সাময়িক ভাবে ওই পদে থাকবেন তিনি। কিন্তু তার পর এক বছর কেটে গিয়েছে। ১০ অগস্ট অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে সনিয়ার মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সভাপতি নির্বাচনের জন্য যত দিন পর্যন্ত না সঠিক পদ্ধতি ঠিক হয়, তত দিন সনিয়াই দায়িত্ব সামলাবেন বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে।

কংগ্রেসের ১৩৫ বছরের যাত্রাপথে এত দিন নেহরু-গাঁধী পরিবারের সদস্যরাই সাধারণত দলের নেতৃত্বে থেকেছেন। তাই সভাপতি নির্বাচন এত দিন শুধুমাত্র নামমাত্র রীতিই ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে সভাপতি নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। তবে এ ক্ষেত্রেও দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে নতুন প্রজন্মের। নতুন প্রজন্মের কংগ্রেস নেতারা রাহুল গাঁধীকেই দায়িত্বে ফেরানোর পক্ষে সওয়াল করলেও, স্থয়ী ভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন এমন কাউকে সভাপতি পদে বসানোর পক্ষে প্রবীণরা।

মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর থেকেই গাঁধী পরিবারের হাতে দলের রাশ রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। রাজস্থানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী তাতে ইন্ধন জোগায়। কোনওমতে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা সেই পরিস্থিতি সামাল দিলেও, দলের একাংশের মতে, সচিন পাইলট ও অশোক গহলৌতের মধ্যে মতবিরোধ সাময়িক ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। সময় এলেই ফের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তাই সকলের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলতে পারেন এমন সুনেতৃত্বের প্রয়োজন দলের।

আরও পড়ুন: পিছোবে না পরীক্ষা, সেপ্টেম্বরেই জেইই-নিট, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট​

রাহুল গাঁধীর উপর ভরসা করে বসে থাকা উচিত নয় বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরও। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতাদের কাছে সভাপতি হিসেবে এখনও রাহুল গাঁধীই প্রথম পছন্দ। উনি পদত্যাগপত্র তুলে নিলেই হবে। কিন্তু উনি যদি তাতে রাজি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে বিকল্প সমাধান খুঁজতে হবে আমাদের। কারণ এক জন অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি সব দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নেবেন, এমনটা আশা করা যায় না। তাই সভাপতি পদে এবং কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির আসনগুলিতে নির্বাচন হলে তা দলের পক্ষেই লাভজনক।’’

তারুরের কথায়, ‘‘কংগ্রেসকে নিয়ে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। তা রুখতে হলে অবিলম্বে সভাপতি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে আমাদের। এমন এক জন নেতাকে খুঁজতে হবে, যিনি পূর্ণমেয়াদের সভাপতি হবেন। সভাপতি নির্বাচিত করা গেলে, দলে সাংগঠনিক স্তরে যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করা এবং দ্রুত তার সমাধান সম্ভব হবে। তখন নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE