Advertisement
E-Paper

ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপানোর কথা ভাবছেন ট্রাম্প! নজর খাবারের থালায়, ঘরোয়া অসন্তোষ সামাল দেওয়ার চেষ্টা

বিদেশ থেকে কৃষিজ পণ্য আমদানির জন্য আমেরিকার কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে বার বার অভিযোগ উঠেছে সে দেশে। দাবি করা হচ্ছে, সস্তায় আমদানি করা চালের জন্য আমেরিকার নিজস্ব কৃষিজ পণ্য নিজেদের দেশেই বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০৪
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।

৫০ শতাংশ শুল্ক আগে থেকেই চাপানো রয়েছে। এ বার ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপানোর কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার বাজারে ভারতের চালের উপর শুল্ক চাপাতে পারেন তিনি। সোমবার এমনটাই আভাস দিয়েছেন ট্রাম্প। শুধু ভারত থেকে আমদানি করা চালের উপরেই নয়, কানাডা থেকে আমদানি করা সারের উপরেও শুল্ক চাপাতে পারেন তিনি।

বিদেশ থেকে কৃষিজ পণ্য আমদানির জন্য আমেরিকার কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে বার বার অভিযোগ উঠেছে সে দেশে। অন্য দেশ থেকে সস্তায় আমদানি করা চালের জন্য আমেরিকার নিজস্ব কৃষিজ পণ্য নিজেদের দেশেই বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিবিধ অভিযোগের মাঝেই ভারত থেকে চাল আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা শুরু করলেন ট্রাম্প।

আমেরিকার বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রশ্ন উঠেছে গত কয়েক মাসে। এ বিষয়ে পদক্ষেপের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের উপর চাপও তৈরি হচ্ছিল। এই পরিস্থিতির কারণে ইতিমধ্যে ভোটারদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে, যা রিপাবলিকান শিবিরকে কিছুটা রাজনৈতিক ঝুঁকিতেও ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সোমবার হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠান থেকে মার্কিন কৃষকদের জন্য কোটি কোটি ডলারের সহায়তার কথা ঘোষণা করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে আমেরিকার কৃষকদের পরিস্থিতির কথা ফের উঠে আসে।

অনেকেই অভিযোগ করেন, সস্তায় আমদানির জন্য বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। তাঁরা ট্রাম্পকে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, ভর্তুকিযুক্ত চাল আমদানির ফলে আমেরিকার বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে ঘরোয়া পণ্যের দাম কমে যাচ্ছে। কোন কোন দেশ থেকে বেশি পরিমাণে চাল আমদানি হয়, তা কৃষকদের কাছে জানতে চান ট্রাম্প। উত্তরে লুইসিয়ানার কেনেডি রাইস মিলের সিইও মেরিল কেনেডি জানান, ভারত, তাইল্যান্ড এবং চিন রয়েছে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এর মধ্যে চিন থেকে আমদানি হওয়া চাল মূল ভূখণ্ডের পরিবর্তে পোর্টো রিকোয় যাচ্ছে। ওই চালকলের কর্তা ট্রাম্পের উদ্দেশে বলেন, “আমরা বছরের পর বছর ধরে পোর্টো রিকোয় চাল পাঠাইনি। আমরা সত্যিই সংগ্রাম করছি।” তাঁর দাবি, বর্তমানে যে পরিমাণ আমদানি শুল্ক রয়েছে, তাতে বিশেষ কাজ হচ্ছে না। তাই এই শুল্কের হার দ্বিগুণ করার জন্য ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন তিনি।

ট্রাম্পও তাঁদের আশ্বস্ত করেন, ভারত থেকে আমেরিকায় চাল এনে মজুত করার বিষয়টি তিনি দেখবেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, “ওদের ডাম্পিং (এক জায়গায় এনে জমানো) করা উচিত নয়। আমি এটা শুনেছি, আমি অন্যদের কাছ থেকে এটা শুনেছি। আপনারা এটা করতে পারেন না।” একই রকম ভাবে কানাডা থেকে সার আমদানির পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখতে চান তিনি। বস্তুত, আমেরিকায় আমদানি করার সারের বেশির ভাগই যায় কানাডা থেকে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, “প্রয়োজনে আমরা কড়া শুল্ক চাপাব।”

ভারত এবং কানাডা দুই দেশই বর্তমানে আমেরিকার সঙ্গে নিজেদের বাণিজ্যিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছে। দ্বিপাক্ষিক স্তরে বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য দফায় দফায় আলোচনা চলছে। তবে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। এ অবস্থায় ভারত থেকে আমদানি করা চাল নিয়ে ট্রাম্পের নয়া চিন্তাভাবনা দু’দেশের বাণিজ্য আলোচনাকে আরও মন্থর করে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। প্রথমে ২৫ শতাংশ, তার পরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে ‘শাস্তিমূলক ভাবে’ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চেপেছে নয়াদিল্লির উপর। এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রতিনিধিদল ভারতে আসছে। সেখানে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হয় কি না, সে দিকে নজর থাকবে।

Donald Trump US Tariff US India Trade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy