Advertisement
E-Paper

নিজস্ব বাহিনীকে চাঙ্গা করে হিন্দুত্বে আস্থা যোগীর

ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে স্থানীয়মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগনোর পরিকল্পনা নিয়েছে শাসক শিবির। আর মেরুকরণ প্রশ্নে দলের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে হিন্দু মেরুকরণের হাওয়া সব সময়েই রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১০
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল ছবি।

লোকসভা নির্বাচনে কাজ করেনি হিন্দুত্বের হাওয়া, তা সত্ত্বেও রাজ্যের দশটি আসন্ন উপনির্বাচনে জয় পেতে হিন্দুত্বের তাসেই ভরসা রাখতে চাইছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরে হিন্দুত্বের আঁচেই ঘুঁটি সাজানো শুরু করেছেন যোগী। কাঁওয়ার যাত্রা উপলক্ষে গোটা রাস্তায় খাবারের দোকানদারদের নাম লেখার নির্দেশ দেয় যোগী প্রশাসন। লক্ষ্য, ছিল মূলত মুসলিম দোকানমালিকদের চিহ্নিতকরণ। যে সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিলেও, উত্তরপ্রদেশের হিন্দু সমাজের বড় অংশ ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। গত জুলাই মাস থেকে ধাপে ধাপে বিধানসভায় পেশ হয় ‘লাভ জিহাদ’ বিল। মুসলিম যুবকেরা নাম ভাঁড়িয়ে কিংবা চাকরি দেওয়ার নামে হিন্দু মহিলাদের বিয়ের নামে ধর্ম পরিবর্তন করে যাচ্ছে বলে দীর্ঘ সময় ধরে সরব গেরুয়া শিবির। যা রুখতেই ওই বিলটি আনার সিদ্ধান্ত নেয় যোগী সরকার। আনা হয় ধর্মান্তরকরণ বিরোধী বিল। যাতে জোর করে, প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরকরণের চেষ্টা হলে কড়া আইনি সাজার সুপারিশ করা হয়েছে।

কিন্তু এ বারের লোকসভা নির্বাচন স্পষ্ট করে দিয়েছে, চড়া দাগের হিন্দুত্বের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। যার উদাহরণ অযোধ্যা। রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা সত্ত্বেও অযোধ্যা যে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদ কেন্দ্রে হার হয়েছে বিজেপি প্রার্থীর। বারাণসীতেও ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। ওই কেন্দ্রে প্রার্থী স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীর জয়ের ব্যবধান এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছে।

যদিও যোগী শিবিরের ব্যাখ্যা, অযোধ্যা ও কাশীতে দলের ভাল ফল না করার পিছনে হিন্দুত্বের চেয়ে বেশি দায়ী স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ। ওই দুই তীর্থ ক্ষেত্রে পুনর্বাসন, বাইরের লোকেদের কাছে ব্যবসা হারানো নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। যার কোনও আঁচ পায়নি প্রশাসন বা দল।

বিজেপি নেতৃত্বের মতে, আমজনতার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের কাজে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। ঠিক সময়ে তা সামাল দেওয়া গেলে ভোটে বিপর্যয় অনেকাংশে রুখে দেওয়া সম্ভব হত। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে স্থানীয়মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগনোর পরিকল্পনা নিয়েছে শাসক শিবির। আর মেরুকরণ প্রশ্নে দলের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে হিন্দু মেরুকরণের হাওয়া সব সময়েই রয়েছে। যোগী সেই হিন্দুত্বের আঁচকে ভোটের আগে ফের উস্কে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন।

সেই কারণে মিল্কিপুর-সহ একাধিক বিধানসভার প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের প্রসঙ্গে কৌশলগত ভাবে সরব হতে দেখা যাচ্ছে যোগীকে। পাশাপাশি রাস্তায় মহিলাদের নিগ্রহ ঠেকাতে ‘অ্যান্টি রোমিও’ স্কোয়াডকে নতুন করে মাঠে নামিয়েছেন যোগী।বিরোধীদের অভিযোগ, তলে তলে সক্রিয় করা হয়েছেহিন্দু যুব বাহিনীকেও। গোরক্ষাছাড়াও, হিন্দুদের উপর অন্য ধর্মালম্বীদের ‘অত্যাচার’ রুখতে এক সময়ে ওই বাহিনী গঠন করেছিলেন যোগী। অনেকের মতে, যোগীকে ক্ষমতায় আনার পিছনেও ওই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় সেই বাহিনীকে বসিয়ে দেন যোগী। সূত্রের মতে, উপনির্বাচনের পাশাপাশি ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সক্রিয় করা হয়েছে সেই বাহিনী।

Yogi Adityanath BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy