লকার ভেঙে মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়েছে চোরেরা। ছবি: সংগৃহীত।
লকার ধুয়েমুছে প্রায় কোটি টাকার জিনিসপত্র সমেত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে গেল চোরেরা। কাকপক্ষীও টের পেল না। যখন জানা গেল, তত ক্ষণে পাখিরা হাওয়া!
কী ভাবে জানা গেল?
আর পাঁচটা দিনের মতোই রুটিনমাফিক স্ট্রংরুমে গিয়েছিলেন অনিল ভার্গব। প্রতি দিন ব্যাঙ্কে ঢুকে ওটাই প্রথম কাজ তাঁর। সঙ্গে অন্য দিনের মতো ছিলেন সহকর্মী অজয় কুমার। দু’টি দরজা পেরিয়ে স্ট্রংরুমে ঢুকতে হয়। দু’জনের কাছে রাখা দু’টি চাবি একসঙ্গে ঘোরালেই তবে তার মূল দরজা খোলে। তবে, প্রথম দরজাটা খুলতেই চোখ কপালে ওঠে দু’জনের।
দরজার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে তাঁরা দেখেন, স্ট্রংরুমের দেওয়ালে মেঝে থেকে প্রায় ফুট ছয়েক উপরে একটি বড়সড় ফুটো রয়েছে। পাশেই পড়ে রয়েছে বড়সড় হাতুড়ি, গাঁইতি এবং করাত। এর পর স্ট্রংরুমের ভিতর ঢুকে তো তাঁদের চক্ষু প্রায় চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। সেখানে অনেকগুলি লকার ভাঙা। আর তার থেকে উধাও সমস্ত জিনিসপত্র।
আরও পড়ুন
আবার নতুন সিরিজের ৫০০ টাকার নোট আনছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মোদীনগর শাখায় সোমবার রাতে এ ভাবেই সিঁদ কেটে দুঃসাহসিক চুরি হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কত টাকার জিনিসপত্র খোয়া গিয়েছে তা সঠিক ভাবে জানা যায়নি। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের অনুমান, প্রায় কোটি টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে। নথির বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। চোরেদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
কী ভাবে স্ট্রংরুমে ঢুকল চোরেরা?
প্রাথমিক তদন্তের পর গাজিয়াবাদ পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যাঙ্কের ঠিক পিছনেই রয়েছে একটি পরিত্যক্ত কারখানার অফিসবাড়ি। ব্যাঙ্কের স্ট্রংরুম এবং অফিসবাড়ির মধ্যে প্রায় ন’ইঞ্চি পুরু একটাই দেওয়াল। আর গোটা চত্বরটা প্রায় ৩০ ফুট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। ওই অফিসঘরে ঢুকে হাতুড়ি, গাঁইতি দিয়ে মাঝের দেওয়াল ভাঙতে শুরু করে চোরেরা। এর পর ব্যাঙ্কের স্ট্রংরুমে ঢুকে করাত দিয়ে লকারের স্টিলের ফ্রেম ভেঙে ফেলে তারা। স্ট্রংরুমের ৪৩৫টি লকারের মধ্যে ৩০টি এ ভাবেই ভাঙা হয়েছে। লকারের ভিতরের সামগ্রী ছাড়াও ঘরে রাখা একটি দোনলা বন্দুকও খোয়া গিয়েছে। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে স্ট্রংরুমের ভিতরে একটি ড্রয়ারে নগদ টাকা থাকলেও তা ছুঁয়ে দেখেনি চোরেরা।
দুঃসাহসিক ওই চুরির খবর জানাজানি হতেই এ দিন সকাল থেকেই ব্যাঙ্কে ভিড় জমাতে শুরু করেন গ্রাহকেরা। মোদীনগরের এক ব্যবসায়ী মুকেশ গয়াল আক্ষেপ করে জানান, তাঁর স্ত্রীর সমস্ত গয়না ওই ব্যাঙ্কের লকারে রাখাছিল। ছিল গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্রও। সে সব কি আর আদৌ ফেরত্ পাওয়া যাবে? প্রশ্ন ওই ব্যবসায়ীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy