পিকআপ ভ্যান চালিয়ে দিনে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা আয় করেন তিনি। কিন্তু গত রবিবারের পর থেকে সেই উপার্জন বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁর। কারণ গাড়িটিকে পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে পরীক্ষার জন্য। নেপথ্যে দিল্লির ধৌলা কুয়াঁয় বিএমডব্লিউ দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন অর্থ মন্ত্রকের উপসচিব নভজ্যোত সিংহ এবং তাঁর স্ত্রী সন্দীপ কউর। তাঁরা রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন বিএমডব্লিউ গাড়ির সওয়ারিরাও।
পথচারীরা যখন ছবি আর ভিডিয়ো তুলতে ব্যস্ত, সেই সময় সেই রাস্তা ধরেই যাচ্ছিলেন সুলতানপুরীর বাসিন্দা পেশায় পিকআপ ভ্যানচালক মহম্মদ গুলফাম। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘পথচারীদের অনেকেই ভিডিয়ো তুলছিলেন। আমার গাড়িটিকে দাঁড় করাই। দেখলাম দুর্ঘটনায় আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন চার জন। সেখানে একটি অ্যাম্বুল্যান্সও ছিল। পথচারীরা অ্যাম্বুল্যান্স চালককে বার বার অনুরোধ করেন আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু নিতে রাজি হননি।’’
গুলফাম আরও জানিয়েছেন, অ্যাম্বুল্যান্স চালক আহতদের নিতে অস্বীকার করলে তিনি নিজের পিকআপ ভ্যানে আহতদের তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁর কথায়, ‘‘সেই সময় আহতদের চিকিৎসার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। তাই হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।’’ কিন্তু সেই ঘটনার পর তাঁর গাড়ি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে বলে দাবি গুলফামের। তাঁর দাবি, ‘‘রবিবার থেকে থানায় পড়ে রয়েছে আমার গাড়ি। তদন্তকারীরা গাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন। আর বার বারই বলছে, এক-দু’দিনের মধ্যে ছেড়ে দেব। থানাতেও বার বার ডেকে পাঠানো হচ্ছে।’’
গুলফাম জানিয়েছেন, দিনে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা উপার্জন করেন। কিন্তু রবিবারের পর থেকে সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার রুজি-রুটির সমস্ত কিছুই এই পিকআপ ভ্যান। ভাড়াবাড়িতে থাকি। পাঁচ বছরের কন্যসন্তান আছে। আমার পরিবার খুব আতঙ্কিত।’’ বিপাকে পড়লেও তিনি যে আহতদের উদ্ধার করে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছে দিতে পেরেছিলেন, তার জন্য গর্বিত। তবে গুলফামের দাবি নস্যাৎ করেছে পুলিশ। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লি) অমিত গোয়েলের দাবি, উদ্ধারকারীর গাড়ি আটক করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার স্ত্রীকে বাইকে নিয়ে প্রতাপনগরের বাড়িতে ফিরছিলেন নভজ্যোত। বিএমডব্লিউ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে নভজ্যোতের। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি নভজ্যোতের স্ত্রী। বিএমডব্লিউ-র চালক গগনপ্রীতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।